1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশু রিয়া মণিকেও বাঁচানো গেল না - Pundro TV
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন



ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশু রিয়া মণিকেও বাঁচানো গেল না

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ছয় বছর বয়সী শিশু রিয়া মণি ২০ আগস্ট ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। মারা যাওয়ার পাঁচ দিন আগে (১৫ আগস্ট) তাকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তির আগে রিয়াকে চিকিৎসার জন্য ওষুধের দোকান ও বৈদ্যের কাছে নেওয়া হয়েছিল।

রিয়ার বাবা মো. রাহেল পেশায় রিকশাচালক। মা নাবিলা আকতার গৃহিণী। তাঁরা চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী পুলিশ লাইন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। এক ভাই এক বোনের মধ্যে রিয়া বড় ছিল।

পাহাড়তলী পুলিশ লাইন এলাকায় রাহেল-নাবিলাদের ভাড়া বাসার পাশেই থাকেন রিয়ার ফুফু ফাহিমা আকতার। তিনি আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ১১ আগস্ট রিয়ার জ্বর আসে। চিকিৎসার জন্য পরদিন তাকে স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে নেওয়া হয়। এরপরও তার জ্বর কমছিল না। একপর্যায়ে তার বমিও হয়। তখন রিয়ার দাদি হাজেরা বেগম বলেছিলেন, তাঁর মনে হচ্ছে মেয়েটির শরীরে খারাপ বাতাস লেগেছে বা জিনের আসর পড়েছে। পরে রিয়াকে এক খোনকারের (বৈদ্য) কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

ফাহিমা আরও বলেন, বৈদ্যের কাছে নেওয়ার পরও রিয়ার জ্বর কমছিল না। পরে রিয়াকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত মঙ্গলবার রাতে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির পর রাতেই তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। তখন থেকে রিয়া আইসিইউতেই ছিল। গত রোববার ভোরে তার মৃত্যু হয়।

চমেক হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ধীমান চৌধুরী আজ প্রথম আলোকে বলেন, রিয়াকে হাসপাতালে আনতে দেরি করা হয়েছে। তবে এখানে তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু ডেঙ্গুতে তার ফুসফুস ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার কারণে মেয়েটিকে লাইফ সাপোর্ট দিতে হয়। শেষপর্যন্ত মেয়েটিকে বাঁচানো যায়নি।

ধীমান চৌধুরী আরও বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। ঝাড়ফুঁক একটি কুসংস্কার। এতে কোনো রোগ ভালো হয় না। এতে রোগীর ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

মেয়েটির চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালের দুস্থ তহবিল থেকে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছিল বলে জানান চিকিৎসক ধীমান চৌধুরী। এ ছাড়া এলাকার লোকজনও মেয়েটির চিকিৎসার জন্য সাহায্য-সহযোগিতা করেছিল বলে পারিবারিক সূত্রে জানায়।

রিয়ার মা নাবিলা বলেন, মেয়ে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তার বাবা (রাহেল) রিকশা নিয়ে আর বের হননি। রিয়া যে কয় দিন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল, তত দিন তাঁরা স্বামী-স্ত্রী এখানেই অবস্থান করেছিলেন। ফলে এই কয়েক দিন তাঁদের আয়-রোজগার বন্ধ ছিল। মেয়েকে বাঁচাতে তাঁরা তাঁদের সাধ্যের মধ্যে সব চেষ্টাই করেছেন। তারপরও মেয়েকে বাঁচাতে পারেননি।

নাবিলা এখন তাঁর দেড় বছর বয়সী ছেলে ইব্রাহিম হোসেনকে আগলে রাখছেন। তিনি জানালেন, মেয়ের স্মৃতি ঘুরে-ফিরে তাঁর মনে আসে। মেয়ে মারা যাওয়ার দুই দিন আগে থেকে তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। মেয়ে শুধু তাকিয়ে থাকত। ‘রিয়া’, ‘রিয়া’ বলে ডাকলেও সে সাড়া দিত না। এর আগে আইসিইউতে রিয়া শেষ বলেছিল, ‘আম্মু, আমাকে পানি দাও।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST