সৌদি আরবে মসজিদে নববিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সফরসঙ্গীদের লক্ষ্য করে অবমাননাকর স্লোগান ও হেনস্তার ঘটনায় পাকিস্তানে ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেও আসামি করা হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। খবর জিও নিউজের।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে ইমরান খানকে ‘ফিতনা’ আখ্যা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘তারা যা করেছে, এর জন্য তাদের কিছুতেই ক্ষমা করা হবে না। ইমরান খান নিশ্চিতভাবে গ্রেপ্তার হবেন।’
ইমরান খানসহ ১৫০ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআরের প্রসঙ্গ টেনে সানাউল্লাহ বলেন, যারা ‘রওজা-ই-রাসুলের’ পবিত্রতা নষ্ট করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করার কোনো কারণ থাকতে পারে না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কোনো নাগরিক যদি এগিয়ে আসেন এবং আইনি ব্যবস্থা চান, তাহলে সরকার কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে না। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতাদের পবিত্র মসজিদে হেনস্তার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। লোকজনকে এটা করতে প্ররোচিত করা হয়েছিল।
সানাউল্লাহর দাবি, পরিকল্পনা অনুযায়ী মসজিদে নববিতে গুন্ডামি করতে অনিল মুসারাত ও সাহিবজাদা জাহাঙ্গিরের নেতৃত্বে একদল মানুষ যুক্তরাজ্য থেকে সৌদি আরব পৌঁছায়। তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। কয়েকজনকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে যান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিন দিনের সফরে গত বৃহস্পতিবার মদিনায় পৌঁছান তিনি। ওই দিন মসজিদে নববিতে গেলে তাঁর সফরসঙ্গীদের লক্ষ্য করে কয়েকজন মুসল্লি স্লোগান দিতে থাকেন এবং তেড়ে আসেন। এ ঘটনায় পুলিশ পাঁচ পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মরিয়াম আওরঙ্গজেব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক মন্ত্রী শাহজিয়ান বুগতি পৌঁছালে তাঁদের লক্ষ্য করে ‘চোর চোর’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন কিছু লোক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা এই দুজনের দিকে তেড়ে যান। তাঁরা শাহজিয়ানের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং তাঁর চুল ধরে টান দেন। তাঁরা পিটিআই–সমর্থক বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় ফয়সালাবাদ থানায় ইমরান খানসহ ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ নাইম নামের একজন এফআইআর দায়ের করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক যোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শাহবাজ গিল, জাতীয় পরিষদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি, আইনপ্রণেতা শেখ রশিদ শফিক, অনিল মুসারাত প্রমুখ রয়েছেন।