দফায়-দফায় সংঘর্ষ, আর প্রাণহানির সাক্ষী হয়েছে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ। তিন দিন ধরে চলা বিক্ষোভে নাকাল রাজধানীবাসী। অবশ্য দাবি আদায়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-পিটিআইয়ের এমন রণমূর্তি আগেও দেখেছে দেশটির মানুষ। কিন্তু এবার সরকার পতনের চূড়ান্ত ডাক দিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। ভেবেছিলেন জেলে বসেই পতন ঘটাবেন সরকারের! তবে সে আশায় গুড়ে বালি।
ইমরানের ডাকে সাড়া দিয়ে লাখ লাখ কর্মী-সমর্থক ইসলামাবাদ হাজির হন। জেলে থাকায় ইমরানের হয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার স্ত্রী বুশরা বিবি ও বোন আলিমা খান। কিন্তু এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে যত ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তার সবটাই করেছে পাকিস্তান সরকার। ডি-চক কেন্দ্র করে যে সহিংসতা হয়েছে, তা নিয়ে আগেই পরিকল্পনা এঁটে রেখেছিল তারা। আর তাই অঙ্কুরেই শেষ পিটিআইয়ের আন্দোলন।
যদিও ইমরানের চোখে তার দলের কর্মী-সমর্থকদের এই আন্দোলন প্রশংসনীয়। তবে শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান। শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ তাদের অধিকার এবং সত্যিকারের স্বাধীনতা আদায় করতে চাইছে বলেও দাবি করেন পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এজন্য কর্মী-সমর্থকদের মাঠেই থাকতে বলেছেন তিনি। কিন্তু পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে ভিন্ন নির্দেশ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর ও পিটিআই প্রধান ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি বিক্ষোভস্থল থেকে পালিয়ে যান। এরপরই বুধবার এক প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে পিটিআইয়ের মিডিয়া সেল। সেখানে বলা হয়, সরকারের বর্বরতা এবং কেন্দ্রীয় রাজধানীকে নিরস্ত্র মানুষের জন্য কসাইখানায় পরিণত করার পরিকল্পনার কারণে আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সাময়িক স্থগিত করছি।
এখন দলটি বলছে, ইমরানের নির্দেশনা মেনেই সামনের দিনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। বিক্ষোভে কী ধরনের নির্মমতা স্বীকার করে দলটির কর্মী-সমর্থকরা তা ইমরান খানকে জানানো হবে বলেও জানায় পিটিআই। এই বিক্ষোভের ঘটনায় এ পর্যন্ত পিটিআইয়ের ৮ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, বুশরা বিবির জেদের কারণেই সহিংস হয়ে উঠেছে ইসলামাবাদের এই বিক্ষোভ।