ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ চলে গেলে মোমবাতি ও মোবাইল টর্চ লাইট দিয়ে চলে চিকিৎসার কাজ। বিকল্প হিসেবে জেনারেটর থাকা সত্ত্বেও সেটি জ্বালানি তেলের অভাবে ২০২০ সাল থেকে অচল। ফলে চলমান বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সসহ চিকিৎসকদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে নিজ উপজেলা ছাড়াও পার্শবর্তী কেন্দুয়া, নান্দাইল, গৌরীপুর উপজেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় শতশত রোগী আসেন চিকিৎসা সেবা নিতে। ফলে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে এমনিতেই হিমশিম খেতে হয়। এরমধ্যে দিনে যেমন তেমন রাতে বিদ্যুতের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হয় রোগী ও চিকিৎসকদের। তবে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের বিকল্প হিসেবে ২০২০ সালে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয় একটি জেনারেটর। কিন্তু সেটি না চালানোর ফলে দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে।
এ নিয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলেন, সরকারি ভাবে জ্বালানি তেলের বরাদ্দ না থাকায় জেনারেটর চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মোবাইলের টর্চ লাইট বা মোমবাতি জ্বালিয়ে স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা কাজ করতে হয়। তাই জেনারেটরটির জ্বালানির ব্যবস্থা করে দ্রুত চালু করার দাবি জানান হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও রোগীরা।
সরেজমিনে হাসপাতালের নারী ওর্য়াডে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর বেশির ভাগ রোগীর বেডের পাশে মোবাইল ফোনের লাইট ও মোমবাতি জ্বলতে দেখা যায়। পুরুষ ওয়ার্ডেও একই চিত্র, অন্ধকারের মধ্যেই স্বজনরা রোগীর পাশে বসে আছেন। তার মধ্যে অনেকে মোমবাতি বা মোবাইল ফোনের আলো জ্বালিয়ে খাবারও খাচ্ছেন। এছাড়া জরুরি বিভাগ ও নার্সদের রুমেও একই দৃশ্য।
হাসপাতালের নারী ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন শরিফা আক্তার ও লুৎফুন্নাহারসহ বেশ কয়েকজন জানান, হাসপাতালে রোগী ভর্তি করিছেন তারা। প্রতিদিন রাতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। এসময় মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হয়। মাঝে মাঝে মোমবাতি জ্বালিয়ে খাবার খেতে হয়।
হাসপাতালে আসা পুরুষ ওর্য়াডে ভর্তি আব্দুল আজিজ নামের এক রোগী বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে ওয়ার্ডে কোনো প্রকার আলোর ব্যবস্থা নাই। নেই কোনো বিকল্প ব্যবস্থা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সুমাইয়া হোসেনে লিয়া বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলবো।
ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে রয়েছে একটি জেনারেটর। নতুন অর্থবছরে আবেদন করলে আশা আছে তেল বরাদ্দের ব্যবস্থা হবে। পরে জেনারেটরটা চালু হয়ে গেলে এমন সমস্যা হবে না।