রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে ইউক্রেনের চার অঞ্চলে গণভোট শুরু হয়েছে। ওই গণভোটের মধ্যেই শুক্রবার পূর্বাঞ্চলীয় দোনবাসের গুরুত্বপূর্ণ শহর বাখমুটের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখলে নিয়েছে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর এক জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দোনেৎস্ক অঞ্চলের ইয়াতস্কিভকা গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে। এছাড়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বাখমুতের দক্ষিণে অবস্থানের উপরও নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়ায় গণভোট শুরু হয়েছে বলে শুক্রবার ওই চার অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা জানিয়েছেন।
শুরু থেকেই ওই গণভোটের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে পশ্চিমাবিশ্ব ও ইউক্রেন। ওই গণভোটকে কোনো আইনি পরিণতি ছাড়াই একটি ‘ধোঁকাবাজি’ হিসেবে অভিহিত করেছে আসছে তারা।
বিশেষ করে দোনেৎস্ক এবং জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের বিশাল অংশ এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখলে রয়েছে। কিয়েভ অধিকৃত অঞ্চলের জনগণকে এই গণভোট প্রক্রিয়া বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এই ভোটকে স্বাগত জানিয়ে স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের পিপলস কাউন্সিলের প্রধান ভ্লাদিমির বিদিওভকা টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত গণভোট শুরু হয়েছে। এই গণভোট আমাদের দেশের ন্যায্য গতিপথ পুনরুদ্ধার করার জন্য, আমাদের বাসভূমিতে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য, আমাদের ঐতিহাসিক মাতৃভূমি – রাশিয়ার অংশ হিসেবে দোনবাসের মর্যাদাকে সুসংহত করার জন্যই আয়োজন করা হয়েছে।
অপরদিকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়ার মতো তার দেশ সেনা সমাবেশের কোনো পরিকল্পনা করছে না। বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে লুকাশেঙ্কো বলেন, রাশিয়ায় সেনা সমাবেশ করা হচ্ছে। কিন্তু এখানে সে রকম কোনো ব্যাপার নেই।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার সামরিক রিজার্ভের আংশিক সমাবেশের ঘোষণা দেন।
ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণকে সমর্থন করার জন্য বেলারুশে নতুন ব্যবস্থা ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন এমন গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা লুকাশেঙ্কো এ কথা বলেন ।
রাশিয়া বেলারুশের প্রধান সমর্থক এবং দুই প্রতিবেশী একটি সীমান্তহীন তথাকথিত ‘ইউনিয়ন স্টেট’ বা ঐক্য রাষ্ট্রের অংশ।
রাশিয়া তার আক্রমণ শুরু করার আগে সামরিক মহড়ার অজুহাতে বেলারুশের ভূখণ্ডে বাহিনী, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান মোতায়েন করেছিল। বেলারুশের উত্তরে ইউক্রেনের সীমান্তে রয়েছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর প্রকাশ্যেই মস্কোর সমর্থন জানিয়ে আসছে বেলারুশ।
ইউক্রেনে যুদ্ধ জোরদার করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার সামরিক রিজার্ভের আংশিক সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। পুতিনের সেই ঘোষণার পর থেকেই সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভূক্তির ভয়ে রাশিয়া ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে দেশটির পুরুষরা। এরই মধ্যে কাদের সেনা সমাবেশে ডাকা হবে না তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবিসি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রযুক্তিখাতে কর্মরত, ব্যাংকিং খাতে কর্মরত ও রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা পুতিনের ঘোষণা অনুযায়ী সেনা সমাবেশ থেকে ছাড় পাবেন।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/1490634548108668