রাজধানীর উত্তরা থেকে পল্লবী পর্যন্ত চলেছে মেট্রোরেল। ট্রেনটি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে উত্তরা থেকে পল্লবীর উদ্দেশে রওনা হয়। সেখান থেকে আবার উত্তরায় ফিরে যায়। গতকাল রোববার বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে উত্তরার মেট্রোরেলের ডিপোতে সবুজ পতাকা উড়িয়ে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে ডিপোতে রাখা মেট্রোরেলের ভেতর ঘুরে দেখেন মন্ত্রী।
এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে চারটি স্টেশনের কার্যক্রম ।
এই চারটি স্টেশনের মধ্যেই রেলটি প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক চলাচল করবে। উত্তরায় মূল ডিপোটি মাটিতে থাকলেও, পুরো রেলপথটি উড়াল।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। মেট্রোরেল পুরোপুরি বিদ্যুচ্চালিত রেল। বাংলাদেশে এই প্রথম বিদ্যুচ্চালিত কোন রেল চালু হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলোর একটি মেট্রোরেল। এটি চালু হলে ঢাকার প্রবল যানজট সমস্যার অনেকাংশে সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই বছর মে মাসের মাঝামাঝিতে মেট্রো রেললাইনে প্রথমবার জাপান থেকে আনা রেল ইঞ্জিন চালিয়ে দেখা হয়।
তবে রবিবার থেকে উড়াল রেল সড়কে মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু করা হয়েছে।
ঢাকার উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে পল্লবী পর্যন্ত আপাতত এই রেলের চারটি বগি চলাচল শুরু করেছে। বাকি দুইটি স্টেশন হলো উত্তরা-উত্তর স্টেশন ও উত্তরা সেন্টার।
আপাতত ছয়মাস এই পরীক্ষা চলমান থাকবে।
এখনো বাকি রয়েছে মেট্রোরেলের ২০ কিলোমিটার সড়কের অনেক কাজ ।
যদিও মেট্রোরেলের ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলার ক্ষমতা থাকবে, তবে আপাতত পারফর্মেন্স টেস্টের অংশ হিসাবে পাঁচ কিলোমিটার গতিতে রেলটি চলবে। এরপর আস্তে আস্তে গতি বাড়ানো হবে। সবশেষে ২৫ কিলোমিটার গতিতে রেলটি চালিয়ে দেখা হবে।
আপাতত জাপানি চালকরা এই রেল চালনা করবেন। যখন জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করবেন, তখন থেকে এগুলোর দায়িত্ব নেবেন বাংলাদেশি চালকরা।
এখন চালকদের প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চলছে।
চলাচলের সময় ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রতি সেটে থাকবে ৬টি করে বগি। এসব রেল বগি কেনা হচ্ছে জাপান থেকে।
এখন পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার উড়াল সড়কের প্রায় সাড়ে ১৬ কিলোমিটার নির্মিত হয়েছে। এ পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৬৭ শতাংশ ।
মেট্রোরেল মূলত পল্লবী হয়ে রোকেয়া সরণি ধরে এগুবে। শাহবাগ, টিএসসি হয়ে চলে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত। এর মাঝে ঢাকার ব্যস্ত ফার্মগেট সহ মেট্রোরেল থামবে গুরুত্বপূর্ণ সব স্টেশনে।
মেট্রোরেলে ২৪ টি ট্রেন প্রতি ঘণ্টায় আপ ও ডাউন রুটে ৬০ হাজার যাত্রী আনা নেয়া করতে সক্ষম হবে বলে দাবি করছেন কর্মকর্তারা।
মেট্রোরেলের যাত্রী ভাড়া, কোন স্টেশনে কতক্ষণ থামবে, কত যাত্রী নিয়ে কী গতিতে চলাচল করবে এসব এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
দুই ধাপের পরীক্ষার পর আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চালু করার আগে নির্ধারিত হতে পারে এসব বিষয় ।
মেট্রোরেলের পুরো প্রকল্পে খরচ হবে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে জাপানের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা জাইকা দিচ্ছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা।