আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় এবং সংগঠনবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য জেলা কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতা হলেন ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান মুনাফ ও চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ।
কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ১৬ এপ্রিল এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানাজানি হয়েছে আজ সোমবার। পরে যোগাযোগ করা হলে দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন। তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি এরই মধ্যে অব্যাহতিপ্রাপ্ত দুই নেতাকে লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অব্যাহতি পাওয়া আবদুল মান্নান ও মো. হানিফ ১৫ এপ্রিল নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর বাড়িতে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। তাঁদের বক্তব্য কুরুচিপূর্ণ, কটূক্তিমূলক ও সংগঠনবিরোধী ছিল বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, তাঁদের বক্তব্য সংগঠনবিরোধী, যা নিয়ে পরবর্তী সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে তাঁদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
নুরুল আমিন আরও বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মতিক্রমে লিখিতভাবে তাঁদের দলীয় পদ থেকে প্রাথমিক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া কেন তাঁদের দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অব্যাহতি পাওয়া দুই নেতা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদেরের বিষয়ে কী মন্তব্য করেছেন, তা পরিষ্কার করে বলেননি উপজেলা কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
তিনি বলেন, খারাপ অনেক কথা বলেছে তাঁরা। এসব প্রকাশ করা যাবে না।
তবে অব্যাহতির চিঠি পাননি বলে দাবি করেন ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান। গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আমাদের বহিষ্কার করবে করুক, সমস্যা নাই। আমরাও বহিষ্কার করব। তাঁরা আমাদের কাগজ দিয়ে বহিষ্কার করবে, এই বহিষ্কারে কোনো লাভ নাই। আমরা বহিষ্কার করব জনগণের ভোটের মাধ্যমে।’ ওবায়দুল কাদেরকেও ভোটের মাধ্যমে বহিষ্কার করবেন, এমন প্রশ্নে আবদুল মান্নান বলেন, ‘অবশ্যই। আমাদের যদি আল্লাহ বাঁচাই রাখে।’
১৫ এপ্রিল নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী তাঁর কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর গ্রামের বাড়িতে আয়োজিত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। সেখানে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ আসন অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আসনেও দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দেন ইকরামুল। ওই ইফতার মাহফিলে কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/1031602214440979