মালয়েশিয়ার কলিং ভিসা চালুর প্রশ্নে দুই দেশের মন্ত্রী যার যার অবস্থান থেকে অনড় রয়েছেন। এমওইউ চুক্তির ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এই কাঙ্ক্ষিত শ্রমবাজার খুলতে অনিশ্চয়তা কাটছেই না। একটা ইস্যু সমাধান হলে আরেকটা হাজির। কোন প্রক্রিয়ায় কর্মী যাবে সেই প্রক্রিয়াটা এখনো চূড়ান্ত না হলেও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান একটি অনুষ্ঠানে সিন্ডিকেটের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলছেন যে, বাংলাদেশের ১৬টি এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী আনলে এতগুলো এজেন্সিকে আমাদের নজরদারি করতে অসুবিধা হবে বা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে কঠিন হবে। তাই আমরা যদি নির্দিষ্ট কিছু এজেন্সিকে অনুমতি দেই তাহলে তাদেরকে মনিটরিং করা সুবিধা হবে যে কেউ অনিয়ম করেছেন কিনা। যদিও এই একই কথা ১ মাস আগেই মন্ত্রী বলেছেন। আর বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদের একই কথা যে আমরা সিন্ডিকেটের পক্ষেও না আবার বিপক্ষেও না। আমরা স্বচ্ছতার সহিত কর্মী পাঠাতে চাই।
এই অবস্থানের কারণে কবে নাগাদ কর্মী পাঠানোর দ্বার উন্মোচন হবে আশায় রয়েছেন সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠাতে গেল বছরের ১৯শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ। এরপর চলতি বছরের ১৪ই জানুয়ারি এক চিঠির মাধ্যমে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সকল রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য শ্রমবাজারটি উন্মুক্ত করা হবে না। ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আরও ২৫০টি এজেন্সি সহযোগী হিসেবে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে।
এই প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে ১৮ই জানুয়ারি পাল্টা চিঠি দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান বলেছেন, প্রতিটি দেশে কয়েক হাজার এজেন্সি আছে। সবাইকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দিয়ে মালয়েশিয়ায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড করতে চাই না।
সিন্ডিকেশন বিরোধী আন্দোলনের নেতা বায়রার সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন,সিন্ডিকেট বিপুল পরিমাণ অর্থ পকেটস্থ করার জন্য ২৫টি এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়া সরকারকে প্রভাবিত করছে। তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে বাজার পুনরায় চালু করতে আমাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের কারণে গতবার মালয়েশিয়ায় বিপুল সংখ্যক মানুষ চাকরি পেতে ব্যর্থ হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ এখনো তাদের টাকা ফেরত পাননি।
এদিকে মালয়েশিয়ায় সি ক্যাটাগরির অধীনে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৫০১টি সংস্থা বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে সেবা প্রদান করতে পারবে। ১৭ই মার্চ এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান জানান, মালয়েশিয়ায় উৎপাদন, বৃক্ষরোপণ, পরিষেবা, নির্মাণ ও কৃষিতে কর্মী নিয়োগে এখন পর্যন্ত সেক্টরগুলোর নিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ১৩ হাজার ১৪ জন বিদেশি কর্মীর আবেদন জমা পড়েছে, যা বর্তমানে পর্যায়ক্রমে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
https://www.facebook.com/watch?v=375439967577248