তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দার্দানেলিস প্রণালিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সেতুটির উদ্বোধন করেন। গত শুক্রবার এরদোয়ানের উদ্বোধন করা এই সেতু এশিয়া ও ইউরোপকে যুক্ত করেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, দুই দশক ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দেশটিতে সর্বশেষ বড় যেসব অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে, এর মধ্যে এই ঝুলন্ত সেতু অন্যতম। তুরস্কের চানাক্কালে সেতুই এখন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতু।
তুরস্কের ইউরোপীয় অংশের সঙ্গে এশিয়ার উপকূলের সংযোগ স্থাপনে ১৯১৫ সালে নির্মিত চানাক্কালে নামে এই সেতুর পুনর্নির্মাণে ২৮০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে। তুরস্ক ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণকাজ করেছে।
১৯১৫ সালে দার্দানেলিস প্রণালিতে ফ্রান্স ও ব্রিটিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যের নৌসেনার বিজয়ের বার্ষিকী ছিল গত শুক্রবার। এদিন সেতুটি উদ্বোধন করে এরদোয়ান বলেন, এই সেতু দিয়ে বহু বছর দেশ লাভবান হবে। বিনিয়োগ, কর্মী বাহিনী, রপ্তানিতে এটি দেশকে আরও এগিয়ে নেবে।
রয়টার্স বলছে, ২০২৩ সালে তুরস্কে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও তাঁর দল একে পার্টির জনপ্রিয়তা কমছে বলে বিভিন্ন জনমত জরিপের দেখা যাচ্ছে। বিরোধীরা এরদোয়ানকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। এ পরিস্থিতে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি।
সেতু তৈরির সম্ভাব্য ব্যয় নিয়ে শুরু থেকেই নানা সমালোচনা ও প্রশ্ন তুলে এসেছে তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলা হয়েছে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ওই সেতুতে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর ৩৮ কোটি ইউরো পাবে। চুক্তির পূর্ণ মেয়াদে মোট ৬০০ কোটি ইউরো পাবে তারা।
সেতু উদ্বোধনের দিনই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ৪ দশমিক ৬ কিলোমিটারের এই সেতু ব্যবহার করা যাত্রীবাহী প্রতিটি বাহনকে প্রতিবার সাড়ে ১৩ ডলার দিতে হবে।২০১৭ সালের মার্চে সেতুটির পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়। টানা পাঁচ বছর ধরে পাঁচ হাজারের বেশি শ্রমিক এই সেতু নির্মাণে কাজ করেছেন। ইউরোপকে যুক্ত করে—এমন চারটি সেতু আছে তুরস্কে। এ ছাড়া ইস্তাম্বুলের পাশে আরও তিনটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/487228999714319