ক্রমেই চরমে রূপ নিচ্ছে ইউক্রেন-রাশিয়া পরিস্থিতি। যেকোনও সময় রাশিয়া বিমান হামলা দিয়ে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই এমন সতর্কতা দিয়ে অবিলম্বে মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে ওয়াশিংটন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক জেইক সুলিভান কর্মকর্তা সতর্কতা উচ্চারণ করে বলেছেন, যেকোনও ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। সুতরাং অবিলম্বে মার্কিন নাগরিকদের উচিত সেদেশ ত্যাগ করা।
তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসেছে যে, রাশিয়া ঠিক কখন হামলা চালাতে যাচ্ছে আমরা শুধু সেই দিনক্ষণ কিংবা ঘণ্টার কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে পারছি না। তবে যেকোনও সময় এই হামলার সম্ভাবনা খুব বেশি।” “তাই আমাদের নাগরিকদের উচিত আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন ত্যাগ করা। এক্ষেত্রে পরিবহনসহ যেকোনও সহযোগিতার জন্য তারা সেখানে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারে,” বলেন জেইক সুলিভান।
এদিকে, পরিস্থিতি বিবেচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর আরও ছয় দেশ নিজ নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এগুলো হল- যুক্তরাজ্য, লাটভিয়া, নরওয়ে, ইসরায়েল, জাপান ও এস্তোনিয়া। যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে ইউক্রেন ছাড়তে বলা হয়েছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে মার্কিন নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য তিনি সেনা পাঠাবেন না। তিনি আরও বলেছেন, বিশ্বে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা তিনি আগে কখনও দেখেননি।
হোয়াইট হাউজ শুক্রবার বলেছে, রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হবে বিমান হামলা দিয়ে এবং এ কারণে ইউক্রেন থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বের করে আনা কঠিন হবে। অন্যান্য পশ্চিমা দেশও অবিলম্বে তাদের নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করা সত্ত্বেও রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেন দখল করা বা দেশটিতে হামলা চালানোর কোনো ইচ্ছে তার নেই। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ পশ্চিমা দেশগুলোকে মিথ্যা খবর প্রচার করার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান শুক্রবার হোয়াইট হাউজে বলেছেন, রাশিয়া এমন একটি অবস্থানে পৌঁছেছে যে, তার পক্ষে একটি বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, আমরা ভবিষ্যতের কথা সঠিকভাবে বলতে পারি না তবে পরিস্থিতি দেখে হামলা অত্যাসন্ন মনে হচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া জরুরি মনে করছি। সুলিভান আরো বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে হামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা তা এখনও মার্কিন সরকার জানে না; তবে ক্রেমলিন একটি সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের অজুহাত খুঁজছে যা ভয়াবহ বিমান হামলার মাধ্যমে শুরু হতে পারে।