1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
আবারও মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার চালুর সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে - Pundro TV
শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন



আবারও মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার চালুর সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

২০২৪ সালের শুরুতে মালয়েশিয়া হঠাৎ করেই সব দেশের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয়। এর আগে, তারা ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করত, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তবে অভিযোগ ওঠে, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক পাঠাতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় এবং প্রক্রিয়াটি একটি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। এক বছর ধরে বন্ধ থাকা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও চালুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) মালয়েশিয়ার পুত্রজায়ায় দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশ সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আশা করছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

এই প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তার সঙ্গে রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নেয়ামত উল্ল্যা ভূঁইয়া এবং উপসচিব মো. সারওয়ার আলম। তারা গত মঙ্গলবার মালয়েশিয়ায় পৌঁছেছেন।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য মালয়েশিয়ায় আবারও বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর পথ খুলে দেওয়া। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) রয়েছে, যার মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। নতুন চুক্তি করার সুযোগ না থাকলেও, বাংলাদেশ চাইছে এই সমঝোতা স্মারকের কিছু ধারা সংশোধন করতে।]

বৈঠকে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে এজেন্সি বাছাই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। কারণ আগেরবার বাজার চালুর সময় এজেন্সি নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। মালয়েশিয়া সরকার তখন কিছু নির্দিষ্ট এজেন্সিকে সুযোগ দেওয়ায় বাকি অনেক প্রতিষ্ঠান বঞ্চিত হয়। একইসঙ্গে তৈরি হয় চক্রভিত্তিক নিয়োগ ব্যবস্থা, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে দুর্নীতির।

বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা মনে করছেন, চলমান আলোচনার মধ্য দিয়ে শিগগিরই আবার শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এই লক্ষ্যে দুই দেশের যৌথ কারিগরি কমিটির সভার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়া আগামী ২১-২২ মে ঢাকায় এই কমিটির বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় গেছেন প্রায় ১৩ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক। এর মধ্যে ২০২৩ সালেই গেছেন সাড়ে তিন লাখের বেশি। তবে অতীতে এই বাজার একাধিকবার বন্ধ হয়েছে। ২০০৭-২০০৮ সালে চার লাখ এবং ২০১৭-১৮ সালে তিন লাখ শ্রমিক পাঠানোর পর বাজার বন্ধ হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় গেছেন প্রায় পাঁচ লাখ শ্রমিক।

বর্তমানে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অনেকেই মনে করেন, মালয়েশিয়ায় আরও কয়েক লাখ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। তবে তারা মনে করেন, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে অভিবাসন ব্যয় কমানো। কারণ ২০২২ সালে সরকার মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ব্যয় ৭৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করলেও, বাস্তবে অনেক শ্রমিককে দিতে হয়েছে পাঁচ লাখ টাকারও বেশি।

এই পরিস্থিতিতে অভিবাসন খাত নিয়ে কাজ করা ২৩টি বেসরকারি সংগঠন মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালু করতে সরকারের কাছে ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে। তাদের দাবি— আগের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে অভিবাসন গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরুর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক তাসনীম সিদ্দিকী বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার। তবে এ সুযোগ যেন সীমিত কিছু প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একইসঙ্গে শ্রমিকদের ব্যয় যেন সহনীয় থাকে, তাও নিশ্চিত করতে হবে।

সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, আগের ভুল না করে এবার একটি স্বচ্ছ ও ব্যয়সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া চালুর লক্ষ্যেই আলোচনা চলছে। আজকের বৈঠক থেকেই একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে প্রত্যাশা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST