1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
খালেদা জিয়ার আসন ঘিরে নতুন সমীকরণ - Pundro TV
সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০২ অপরাহ্ন



খালেদা জিয়ার আসন ঘিরে নতুন সমীকরণ

নিউজ ডেস্ক:
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ধোঁয়াশা না কাটলেও প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে ভোটকেন্দ্রিক তৎপরতা শুরু করেছে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। এক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে প্রস্তুতিতে অনেকটাই এগিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্যরা মাঠ গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করলেও জামায়াত আগেভাগেই বিভিন্ন আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে চলেছে। গত শনিবার বগুড়া জেলার সাতটি সংসদীয় আসনে রীতিমতো ঘটা করে দল মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে জামায়াত।

সেই ধারাবাহিকতায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আসন হিসেবে পরিচিত বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনেও জামায়াতের একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন পাওয়া দুই প্রার্থী হলেন বগুড়া-৬ আসনে শহর জামায়াতের আমির ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল এবং বগুড়া-৭ আসনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেড়ারেশনের সহসভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য গোলাম রব্বানী।

জামায়াতের প্রার্থীদের নিয়ে তেমন মাথা ঘামাচ্ছেন না বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তবে প্রতিপক্ষ যে-ই হোক না কেন জামায়াতের আশা, তাদের মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবেন।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানান, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনকে ভিভিআইপি আসন বলা হয়ে থাকে। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এ আসন থেকে প্রার্থী হয়ে থাকেন। আসন দুটি পরিচিত বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে। খালেদা জিয়া অবশ্য অধিকাংশ সময় নির্বাচিত হয়েও সংসদে এ দুটি আসনের প্রতিনিধিত্ব করেননি। তাই তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিবার এ দুই আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। নেতাকর্মীরা চান খালেদা জিয়া এবারও এ দুই আসনে প্রার্থী হন। তাই দলীয় কোনো নেতা প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নন।

বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা এ প্রসঙ্গে কালবেলাকে বলেন, এই দুই আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প চিন্তা করার মতো সময় এখনো আসেনি।

এদিকে নেতাকর্মীদের মাঝে গুঞ্জন রয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে এবারও এই দুটি আসনের মধ্যে একটিতে খালেদা জিয়া প্রার্থী হতে পারেন। অন্য আসনে প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন রয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। তবে এ বিষয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল কেউ এখনই মুখ খুলতে রাজি নন।

বগুড়া-৬ আসনে ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলেও এ আসনে উপনির্বাচনসহ ১৬ বার নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে খালেদা জিয়ার তিনবারসহ বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন ১০ বার। আওয়ামী লীগ প্রার্থী তিনবার, জাতীয় পার্টি একবার, জামায়াতে ইসলামী একবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ১৯৭৩ সালে প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এসএম সিরাজুল ইসলাম সুরজ বগুড়া-৬ আসনের এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে প্রথমবার বিজয়ী হন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ওয়াজেদ হোসেন তরফদার। সীমানা পরিবর্তনের পর ১৯৮৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর আবদুর রহমান ফকির নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুর রহমান ভান্ডারী নির্বাচিত হন। এরপর আসনটি বিএনপির দখলে চলে যায়। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে খালেদা জিয়া নির্বাচিত হয়ে পরে আসনটি ছেড়ে দিলে এখানে উপনির্বাচন হয়। ২০১৪ সালে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচিত হলেও শেষপর্যন্ত তিনি শপথ নেননি। পরে আসনটি যায় আওয়ামী লীগের রাগেবুল আহসান রিপুর দখলে।

এবার এ আসনে জামায়াতের মনোনয়ন পাওয়া আবিদুল রহমান সোহেল তার বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। কালবেলাকে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্যই হলো নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবেই। জনগণ যাকে ভালো মনে করবেন তাকেই বেছে নিবেন। তা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে আমি মনে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব আন্দোলন-সংগ্রামে বগুড়াবাসীর সঙ্গে প্রথম কাতারে ছিলাম। তাই সদর আসনের ভোটাররা সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করবেন।

এদিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দায়িত্বশীল নেতারা নির্বাচন করে থাকেন। যদিও খালেদা জিয়া সংসদে এ আসনের প্রতিনিধিত্ব করেননি। প্রতিবার উপনির্বাচন হয়েছে। স্বাধীনতার পর গত ১৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ১০ বার, আওয়ামী লীগ দুবার, জাতীয় পার্টি দুবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একবার নির্বাচিত হন। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত মাঠে রয়েছে। বিএনপির সবাই চান খালেদা জিয়া বিগত নির্বাচনের মতো এবারও প্রার্থী হোন। তাই কোনো নেতা এখানে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলতে চান না।

নির্বাচন কমিশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আমানউল্লাহ খান ও ১৯৭৯ সালে বিএনপির হাবিবুর রহমান এমপি নির্বাচিত হন। সীমানা পরিবর্তনের পর ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির আমিনুল ইসলাম সরকার পিন্টু নির্বাচিত হন। এরপর আসনটি বিএনপির হাতে চলে যায়। ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিএনপির প্রার্থীরা এ আসনে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকি ২০২৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন পেয়ে আনকোরা স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলুও এমপি হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিল্টন বলেন, সবাই চাই খালেদা জিয়া, তারেক রহমান বা তাদের পরিবারের কেউ প্রার্থী হোন।

এদিকে জামায়াতের প্রার্থিতা প্রসঙ্গে দলটির বগুড়া শহর শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক আ স ম আবদুল মালেক বলেন, বগুড়া-৭ আসনে জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরার সদস্য গোলাম রব্বানী একক প্রার্থী। তিনি মাঠে কাজ করছেন। ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ



© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST