আজ (বুধবার) বগুড়া সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া কোরের ৮ম কর্ণেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি। বগুড়ার মাঝিড়া সেনানিবাসে আর্মার্ড কোর সেন্টার এন্ড স্কুলের শহীদ লেঃ বদিউজ্জামান প্যারেড গ্রাউন্ডে সামরিক ঐতিহ্য ও রীতি অনুযায়ী সাঁজোয়া কোরের কর্ণেল কমান্ড্যান্ট অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। অভিষেক অনুষ্ঠানে সাঁজোয়া স্কোরের জোতের অধিনায়ক এবং মাষ্টার ওয়ারেন্ট অফিসার সেনাবাহিনী প্রধানকে ‘কর্ণেল ব্ল্যাংক ব্যাজ’ পরিয়ে দেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও বগুড়া এরিয়ার বিভিন্ন পদবীর সদস্যবৃন্দ, সাঁজোয়া কোরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সাঁজোয়া ইউনিটসমূহের প্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সেনাবাহিনী প্রধান অনুষ্ঠানস্থলে পৌছালে তাকে স্বাগত জানান জিওসি, আমি ট্রেনিং এন্ড ডকট্রিন কমান্ড, জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার বক্তৃড়া এরিয়া, পরিচালক, সাঁজোয়া পরিদপ্তর এবং কমান্ড্যান্ট, আর্মার্ড কোর সেন্টার এন্ড স্কুল। সাঁজোয়া কোরের সকল ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকষ দল সেনাবাহিনী প্রধানকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে। ‘কর্ণেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে অভিষেকের পর সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
ঐতিহ্য অনুযায়ী এরপর সেনাবাহিনী প্রধান সাঁজোয়া কোরের সদস্যদের দরবার গ্রহণ করেন বগুড়া সেনানিবাসে উপস্থিত সাঁজোয়া কোরের অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার এবং অন্যান। সকল পদবীর সদস্যবৃন্দ ছাড়াও অনুষ্ঠান উপলক্ষে আগত সদস্যগণ অংশ নেন। সেনাবাহিনী প্রধান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী সাঁজোয়া কোরের বীর শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘সাঁজোয়া চিরন্তন’ এ পুষ্পস্তবক অর্পন করেন এবং আর্মার্ড কোর সেন্টার এন্ড স্কুল এর কোয়াটার গার্ড ও সাঁজোয়া জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
অভিষেক অনুষ্ঠান পরবর্তীতে সেনাবাহিনী প্রধান সাঁজোয়া বোরের ৪৯তম সাংগরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দেন। তিনি সম্মেলনে উপস্থিত সাঁজোয়া কোরের ইউনিটসমূহের অধিনায়কগণ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন এবং মতবিনিময় করেন। তিনি সাঁজোয়া কোরের গৌরবোজ্জল ঐতিহ্য এবং দেশমাতৃকার সেবায় সাঁজোয়া কোরের অবদানের কথা স্মরণ করেন। এসময় তিনি আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দীর কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য সাঁজোয়া কোরের সকল সদস্যের প্রতি আহবান জানান।
সাঁজোয়া কোরকে বলা হয় ‘কিং অব দ্য ব্যাটেল’ বা ‘সমর সম্রাটা। যেকোন যুদ্ধের জয় পরাজয় নির্ধারণে সাঁজোয়ার অবদান অত্যন্ত গুরত্বপূর্ন। সম্মুখ সমরের অগ্রসেনা সাঁজোয়া কোরকে তাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠতম কোর হিসেবে গণ্য করা হয়। ‘প্রাণ দেব মান নয়’ এই মূলমন্ত্র ধারণ করে সাঁজোয়া কোরের সদস্যগণ দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে অঙ্গিকারাবদ্ধ। সেনাবাহিনী প্রধানের সাঁজোয়া কোরের ‘কর্ণেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে এই কোরের সদস্যদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাঁজোয়া কোরের প্রতিটি সদস্যের মাঝে আগামী দিনে দেশসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।