শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ার চাপ কমাতে আগামীতে স্কুল-কলেজের সাপ্তাহিক ছুটি একদিনের পরিবর্তে দু’দিন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রোববার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান সংবাদমাধ্যমক এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত কারিকুলামে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ।
সপ্তাহে দু’দিন ছুটির বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগেও চালু করলে কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। দুই মন্ত্রণালয় চাইলে তা যেকোনো সময় কার্যকর করতে পারবে।
ড. মশিউজ্জামান বলেন, নতুন কারিকুলামের সাথে শিক্ষার্থীদের সাপ্তাহিক ছুটি করা হবে দু’দিন । ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিজেদের মতো করে কিছু সময় কাটাতে পারে। এ জন্য এটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শুধু শিক্ষক আর ক্লাসের পেছনে দৌড়ে পার হয় দিন। এতে করে পড়ার চাপ তাদের ওপর বেশি পড়ে। এ কারণে তাদের সাপ্তাহিক ছুটি একদিনের পরিবর্তে করা হয়েছে দু’দিন । বন্ধের দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা সময় কাটাতে পারবে নিজেদের মতো করে ।
এনসিটিবির এ সদস্য বলেন, সপ্তাহে দু’দিন ছুটি হলেও জাতীয় দিবসগুলোতে খোলা থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কার্যদিবস ধরা হবে। এ দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে নানা ধরনের প্রতিযোগিতায় ।দিনটি নিজেদের মতো করে কাটাবে তারা । এ দিনগুলোর জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। প্রতিযোগিতায় পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে দেয়া হবে নম্বর। সেই নম্বর যোগ হবে বার্ষিক ও অন্যান্য পরীক্ষার সাথে ।
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে ছুটি থাকে দুদিন । কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে এক দিন ছুটি থাকায় শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ কাজ করছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ছুটি বাড়লেও ক্ষতি হবে না শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের । কম হবে না শিক্ষার সময় । আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই করা হয় এ প্রস্তাব । এতে শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ কমবে। এনসিটিবি জানায়, বিদ্যমান সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরে ক্লাস চলে ২১৫ দিন। শনিবার ছুটি হলে ক্লাস হবে ১৮৫ দিন। নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখায় জানানো হয়, সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন ধরে প্রাক-প্রাথমিকে মোট শিখন ঘণ্টা শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সময় নির্ধারণ করা হবে। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিখন হবে ৬৮৪ ঘণ্টা। ৮৫৫ হবে ঘণ্টা চতুর্থ থেকে পঞ্চম শ্রেণীর । এ ছাড়া মাধ্যমিক স্তরে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর মোট শিখন ১
হাজার ৫০ ঘণ্টা, নবম ও দশম শ্রেণীর ১ হাজার ১১৭ ঘণ্টা। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ১ হাজার ১৬৭ ঘণ্টা হবে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নতুন শিক্ষাক্রমের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে । ওই রূপরেখার খসড়ায় অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন দুপুরে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি ।