সভাপতি জানিয়েছিলেন, তামিমের অমন বক্তব্যে কোচও ক্ষুব্ধ। ‘তামিমকে আসলে পরিষ্কার করে জানাতে হবে সে কী চায়। কোন পর্যায়ে আছে সে’—বলেছেন নাজমুল হাসান। এখানে উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময় তামিমের চোট নিয়ে এরকম নেতিবাচক আলোচনা আগেও হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, কাল ম্যাচ চলাকালে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সেও ছিল তামিমের চোট আর ফিটনেস নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার প্রবাহ। তামিম নিজেকে পুরোপুরি ফিট নন বলার পর প্রথম ওয়ানডের আগে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে তাঁকে বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। যদিও কাল কোনো সমস্যা ছাড়াই প্রথম ওয়ানডেতে খেলেছেন তামিম।
একটি সূত্র জানিয়েছে, বারবার তামিমের ফিটনেস নিয়ে আলোচনায় কিছুটা বিরক্ত বিসিবির একটা অংশ মনে করছে, বিশ্বকাপ সামনে রেখে অধিনায়কের এরকম অস্থিতিশীল অবস্থা দলের জন্য ভালো না–ও হতে পারে। অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে আছে এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ। এরকম পরিস্থিতিতে তামিমকে আর ওয়ানডে অধিনায়ক রাখা যায় কি না, তা নিয়ে দুই রকম আলোচনাই আছে বোর্ডে। অনেকে তো সম্ভাব্য নতুন অধিনায়কের নামও বলে দিচ্ছেন—সাকিব আল হাসান।
বিসিবির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচালক অবশ্য তামিমকে নিয়ে সব নেতিবাচক আলোচনাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। আজ সকালে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ পর্যন্ত তামিমই ওয়ানডে দলের অধিনায়ক, এই সিদ্ধান্ত এখনো ভালোভাবেই বহাল আছে। আমরা বিকল্প কিছু ভাবছি না। অন্য যা শুনছেন সবই গুজব।’
কিন্তু বিসিবি যদি তামিমকে অধিনায়ক চায়ও, তামিম নিজে আর এই দায়িত্বে থাকতে চান কি না, সেটাও একটা প্রশ্ন। বিশেষ করে, বিসিবি সভাপতির সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর। অবশ্য কাল ম্যাচ শুরুর আগে মিনিট দশেকের জন্য বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বসা দলীয় সভায় এসব নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। অধিনায়ক তামিমও সেখানে ছিলেন, তবে নাজমুল হাসানের সঙ্গে সাম্প্রতিক বিতর্ক বা অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি তাঁর।
তারপরও তামিম যদি সত্যিই আজ অধিনায়কত্ব ছাড়তে চান বা আরও বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চান, তাহলে বিসিবি তাঁর সিদ্ধান্ত বদলানোর উদ্যোগ নেবে কি না, এমন প্রশ্নে ওই পরিচালক বলেন, ‘আমরা বাইরে থেকে শুনেছি সে একটা সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছে। ও নিজে আমাদের কিছু জানায়নি এখনো। আগে তামিমের সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে ও আসলে কী বলতে চায়।’
আজ দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠেয় সংবাদ সম্মেলনের আরও কয়েক ঘণ্টা বাকি। তামিম যদি কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতেও চান, বোর্ডের হস্তক্ষেপের পর তাতে তিনি অটল থাকেন কি না, দেখার বিষয় সেটি। তবে এবার চট্টগ্রামে আসার পর থেকেই নাকি চট্টগ্রামের ছেলে তামিম মানসিকভাবে কিছুটা বিষণ্ন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাচ্ছেন, যেটা আগে কখনো দেখা যায়নি। স্ত্রী-সন্তানেরা তো সঙ্গেই, গভীর রাত পর্যন্ত হোটেল রুমে গল্প-আড্ডায় ব্যস্ত থাকছেন চট্টগ্রামে থাকা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে। সেসব মুহূর্তেও কখনো কখনো তামিমের হতাশা প্রকাশ পেয়েছে, মনে হয়েছে খেলোয়াড়ি ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছেন।
সেই ভাবনার গভীরতা আসলে কতটুকু, তা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক ঘণ্টা।