কক্সবাজারের টেকনাফে ঘরে ঢুকে পিতা-পুত্রকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে গুলিবিদ্ধ পিতা-পুত্র চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
টেকনাফের উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধরা হচ্ছেন- কচ্ছপিয়া এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে আলি আহমদ ও তার ছেলে মো. জয়নাল (১৪)।
এ ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আহতের স্বজনরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলি আহমদ কচ্ছপিয়া বাজারে তার রড-সিমেন্টের দোকান বন্ধ করে বাড়িতে পৌঁছার কয়েক মিনিট পর অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ঘরের দরজায় টোকা দেয়। এ সময় আলি আহমদের ছেলে জয়নাল দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে আলি আহমদ এগিয়ে এলে তাকেও গুলি করে সটকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে মাথায় গুলি লাগে ছেলে জয়নালের ও কোমরে গুলিবিদ্ধ হন আলি আহমদ।
ঘটনার পর স্বজনরা দুইজনকে উদ্ধার করে প্রথমে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার দিয়ে তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ভোরে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন গুলিবিদ্ধ পিতাপুত্র। এদের মধ্যে ছেলে জয়নালের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ এ ঘটনার বিষয়ে জানান, গুলিবিদ্ধ আলি আহমদ রড-সিমেন্টের দোকানের পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসা করতেন। স্থানীয় মানবপাচারকারী দলের কয়েকজন সদস্য আলি আহমদের দোকানে বিকাশের মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হামলার এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে স্থানীয় মেম্বার সৈয়দ আহমদ এ বিষয়ে জানান, মাসখানেক আগে মানবপাচারকারীদের ৮০ হাজার টাকা গুলিবিদ্ধ আলি আহমদের বিকাশের এজেন্ট সিমে আসে। পুলিশ সেই টাকা জব্দ করে ও মামলা দায়ের করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মানবপাচারকারীরা আলি আহমদকে হুমকি দিয়েছিল। সেই মামলায় প্রধান আসামি হোসাইন আহমদের এক ভাই বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আলি আহমদের স্ত্রী রশিদা আক্তার বাদী হয়ে কচ্ছপিয়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে হোসাইন আহমদসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- একই এলাকার সৈয়দুর রহমান, আজিজুর রহমান ও রোহিঙ্গা ফররুখ আহমদ। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।