দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। সম্প্রতি এই দ্বীপকে ‘সুরক্ষিত সামুদ্রিক অঞ্চল’(মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া) ঘোষণা করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশের সরকার, সেন্টমার্টিনের স্থানীয় জনগণ ও এই দ্বীপের জীববৈচিত্র নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হলিউড কিংবদন্তী তারকা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফাইড পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে, চমৎকার এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে সুরক্ষা দেবে এবং প্রবালের আবাসভূমি হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ডিক্যাপ্রিও। তিনি মনে করেন, দ্বীপের সার্বিক পরিবেশ রক্ষায় এখন মনোযোগ দেওয়া উচিত হবে সবার।
পোস্টে ডিক্যাপ্রিও লেখেন, ‘সেন্টমার্টিন অসাধারণ জীববৈচিত্রে পরিপূর্ণ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণ সীমানায় অবস্থিত ৬৭২ বর্গমাইলের এই দ্বীপ মূলত প্রবাল, ইন্দো-প্যাসিফিক হ্যাম্পব্যাক ডলফিন, বিপদাপন্ন তিমি হাঙরসহ বহুসংখ্যক সামুদ্রিক প্রাণীর গুরুত্বপূর্ণ আশ্রয়স্থল। যার কারণে সেন্টমার্টিনকে সংরক্ষিত সামুদ্রিক অঞ্চল ঘোষণা করায় আমি বাংলাদেশের সরকার, স্থানীয় জনগণ ও এই পদক্ষেপের জন্য কাজ করা এনজিওগুলোকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘এখন, পরবর্তী পদক্ষেপ হলো দ্বীপের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ যতদূর সম্ভব ফিরিয়ে আনা। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে, যেমন- সংরক্ষিত সামুদ্রিক অঞ্চল সম্পর্কিত বিধিনিষেধ নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো, সেসব বিধিনিষেধ ঠিকমতো পালন হচ্ছে কী না- তা যথাযথ নজরদারির আওতায় আনা, সেন্টমার্টিনের অভ্যন্তরীণ বর্জ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা এবং ক্ষয়িষ্ণু প্রবাল প্রাচীর রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।’
হলিউডের সর্বকালের অন্যতম সেরা টাইটানিক সিনেনামে এই ৪৭ বছর বয়সী এই তারকা এরই মধ্যে নিজেকে পরিবেশবাদী হিসেবে পরিচিত করে তুলেছেন।
গত ৭ জানুয়ারি ব্লু ইকোনমি সমৃদ্ধকরণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি-১৪) অর্জনের লক্ষ্যে সরকার বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘সেন্ট মার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণা করেছে।
মূলত সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র। দ্বীপটিতে আছে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ট বা কড়ি জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৫ প্রজাতির ডলফিন, ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, দুই প্রজাতির বাদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল এককালে।