প্রেম চোপড়া, মহেশ বাবু, জন এব্রাহাম, ম্রুণাল ঠাকুর, কারিনা কাপুর খান, অমৃতা অরোরা, অর্জুন কাপুর, সোনু সুদ, বিশাল দাদলানি, নোরা ফতেহি, স্বরা ভাস্করসহ অনেক তারকা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। দিল্লি, হরিয়ানা, বিহার, ছত্তিশগড় রাজ্যের সিনেমা হল বন্ধ। শুটিং স্থগিত, অনিশ্চিত বেশ কিছু বড় বাজেটের ছবি। প্রযোজকদের ২ হাজার ১২৫ কোটি রুপি আটকে যেতে পারে। বছরের শুরুটা ভালো হয়নি ভারতীয় চলচ্চিত্রের। করোনার তৃতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে বলিউড ও দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্পে। একের পর এক ছবির মুক্তি পিছিয়ে যাচ্ছে। স্থগিত হচ্ছে শুটিং। লোকসানের মুখে পড়ছে বলিউড তথা ভারতীয় চলচ্চিত্র। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরে ভারতীয় ছবি একটু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছিল। ‘সূর্যবংশী’, ‘এইটি থ্রি’, ‘চণ্ডীগড় করে আশিকি’, ‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’সহ বেশ কিছু ছবি মুক্তি পায়। বক্স অফিসেও সাড়া জাগায় কিছু ছবি। ছবির শুটিংও শুরু হয়েছিল পুরোদমে। এমনকি প্যান ইন্ডিয়ান বড় বাজেটের ছবি মুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়, শুরু হয় প্রচারণা। এর মধ্যেই আবার ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যায়। এর প্রভাব পড়তে শুরু করে বলিউড ও দক্ষিণি ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে। গত বছর ৩১ ডিসেম্বর ‘জার্সি’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়ায় শহীদ কাপুর অভিনীত ‘জার্সি’ ছবির মুক্তি স্থগিত রাখা হয়। তা ছাড়া এ বছর জানুয়ারি মাসে ‘আরআরআর’, ‘রাধে শ্যাম’ আর ‘পৃথ্বীরাজ’-এর মতো বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি দেওয়া পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে ছবিগুলো আর জানুয়ারিতে মুক্তি পাচ্ছে না। এই চারটি ছবির জন্য নির্মাতাদের ১ হাজার ১৫০ কোটি রুপি ফেঁসে গেছে। এমনকি চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত যে ১৪টি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, সেসব ছবির মুক্তির দিন পিছিয়ে যেতে পারে। এই ছবিগুলোর জন্য প্রযোজকদের ২ হাজার ১২৫ কোটি রুপি আটকে যেতে পারে। তাই ছবি মুক্তির ব্যাপারে এখন বেশ ভেবেচিন্তে পরিকল্পনা করছেন প্রযোজকেরা। তাড়াহুড়া করে মুক্তি দিয়ে কোনো লোকসান গুনতে তাঁরা রাজি নন। করোনার কারণে ভারতের দিল্লি, হরিয়ানা, বিহার, ছত্তিশগড় রাজ্যের সিনেমা হল বন্ধ। একটি ছবির আয়ের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আসে এই রাজ্যগুলো থেকে। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গে ৫০ শতাংশ আসন ব্যবহারের শর্তে সিনেমা হল খোলা রাখা হয়েছে। উত্তর প্রদেশ, গুজরাটসহ বিভিন্ন রাজ্যে রাতের প্রদর্শনী বন্ধ। করোনা আসার পরে মহারাষ্ট্রে কখনোই শতভাগ আসন নিয়ে সিনেমা হল খোলেনি। তাই বড় বাজেটের ছবির প্রযোজকেরা সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায়। বড় বাজেটের ছবির মুক্তির দিন পিছিয়ে যাওয়ার প্রভাব কম বাজেটের ছবিগুলোর ওপর পড়তে পারে। নির্মাতারা ভাবছেন ছবি মুক্তির শিডিউল জটিলতা এড়াতে কম বাজেটের ছবিগুলোর একমাত্র জায়গা হতে পারে ওটিটি। বছরের শেষে যে বড় বাজেটের ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা, সেগুলো পিছিয়ে পরের বছর মুক্তি পেতে পারে। পোঙ্গাল উৎসব উপলক্ষে ১৩ জানুয়ারি অ্যাকশন-থ্রিলারধর্মী তামিল ছবি ‘ভালিমাই’ মুক্তির কথা ছিল। তামিল সুপারস্টার অজিত কুমার আর হুমা কুরেশি অভিনীত এই ছবির মুক্তিও স্থগিত রাখা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিতে করোনা ও অমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমশ। বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলো ছবির শুটিং স্থগিত করে দিয়েছে। যশরাজ ফিল্মস ‘টাইগার থ্রি’ ছবির শুটিং স্থগিত করেছে। সালমান খান আর ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত ছবিটির ১৫ দিনের জন্য দিল্লিতে শুটিং হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া ক্যাটরিনা কাইফের ‘মেরি ক্রিসমাস’, রণবীর সিং-আলিয়া ভাটের ‘রকি অউর রানি কী প্রেম কাহানি’ ছবির শুটিংও বন্ধ রাখা হয়েছে। তেলেগু তারকা বিজয় দেবারাকোন্ডা পুরোদমে ব্যস্ত ছিলেন প্যান ইন্ডিয়া ছবি ‘লাইগার’-এর শুটিংয়ে। তিনি টুইটারে জানিয়েছেন, কোভিড–১৯–এর কারণে ছবির শুটিং বাতিল করেছেন।