1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে ‘বিদেশি ফল’ - Pundro TV
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০১:২৪ পূর্বাহ্ন



নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে ‘বিদেশি ফল’

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৩

সাধ্যের বাজারে বেহাল দশায় যুক্ত নতুন অনুসঙ্গ ‘ফল’। বলা চলে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বিদেশি ফল। রোগির পথ্য হিসেবেও সেই ফলের গায়ে হাত দেওয়া ভার। এক বছরের ব্যবধানে সবধরনের ফলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতিতে আহারের তালিকা থেকেও উঠে গেছে ফল। কিন্তু ফলের বাজার এমন অস্থির কেন?

 

এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রাজধানীর বাদামতলীতে দেশের সবচেয়ে বড় ফলের আড়তে যায় চ্যানেল আই অনলাইন। সেখানে ফল আমদানি কারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়: চাহিদা মতো এলসি খুলতে না পারা, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়া এবং উচ্চ শুল্ক হারের কারণে দেশের বাজারে ফলের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার প্রবণতা।

২০২২ সালের সঙ্গে ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনামূলক চিত্র বলছে: যে আপেল গত বছরের এ সময় ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দরে বিক্রি হতো, সেই আপেল এখন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। ১৫০ থেকে ১৮০ টাকার মাল্টা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আনার এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে। যে লাল আঙ্গুরের দাম ছিলো ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা সেটির দাম গিয়ে ঠেকেছে ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা। ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার কমলা এখন ২৬০ থেকে ২৭০টাকা।

আমদানি ফলের এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কেনো? জানতে চাইলে বাদামতলীর ফল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স এ. মজিদ এন্ড সন্সের মালিক এমডি. ইউসুফ খান জানান: দুই বছর আগে এক কনটেইনার আপেল আনতে যে পরিমান শুল্ক দিতে হতো এখন তার দ্বিগুণ লাগে। আগে যেখানে কনটেইনার প্রতি ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা খরচ হতো এখন তা ৪৭ থেকে ৪৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। প্রতি কনটেইনারে আপেলের ২০ কেজি ওজনের ১ হাজার ১৮৬টি কার্টন থাকে। যার প্রতি কার্টনে শুধু শুল্ক গুনতে হচ্ছে ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। আর মাল্টার এক কনটেইনারে ১৬ কেজি ওজনের ১ হাজার ৬০০ কার্টন থাকে; প্রতি কার্টনে ডিউটি গুনতে হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকা।

দেশীয় ফলে নিরর্ভশীল হতে, সব ধরনের ফল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সরকার মে মাস থেকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করে। যার পর থেকে ডিউটি খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। আগে যেখানে বিদেশি ফলের ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কহার ছিল ৩ শতাংশ, সেটি গত ৯ মাস আগে বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ শতাংশে। তার সঙ্গে আমদানিতে ২৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর এবং ৪ শতাংশ অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট যুক্ত হয়।

আবার এলসি খুলতে ভোগান্তির কথাও উঠে আসে এই ব্যবসায়ীর কথায়। তিনি জানান: লাল আঙ্গুর আনতে তাদের এখন ৭ কেজির একটি কার্টনে ডিউটি খরচই দিতে হচ্ছে ৮৫০ টাকা। এরপর পোর্ট থেকে আনা, লেবার খরচসহ নানা আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত হয়।

আবার খুচরা বিক্রেতারা যখন পাইকারি আড়ত থেকে ফল সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করছে তখন কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ বেশি দামে বিক্রি করছে। আর এসবের চাপ গিয়ে পড়ছে সাধারণ ক্রেতার ওপর। ব্যাবসায়ীরা বলছেন, আগের তুলনায় তাদের বেচা-বিক্রি কমেছে কয়েকগুণ। তাদের পক্ষে এখন ব্যবসা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমদানি করা ফলের তালিকায় রয়েছে আপেল,  ডালিম, চেরি, ড্রাগন, কিউই, অ্যাভোকাডো, মালটা, নাশপাতি, আঙুর, কমলা, তরমুজ, রামবুটান, ম্যান্ডারিনসহ প্রায় ৫০’র বেশি প্রকারের ফল।এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়ে থাকে আপেল, কমলা, আঙুর ও মাল্টা।

এমন পরিস্থিতে বাজারে এসে চাহিদা মতো ফল কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। মোহাম্মদপুর টাউন হলে বাচ্চার জন্য লাল আঙ্গুর আর আপেল কিনতে এসেছেন বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের চাকুরিজীবী ইয়াসির আহমেদ। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন: বেশ কয়েকদিন থেকেই আমার বাচ্চাটা লাল আঙ্গুর খেতে চাচ্ছিলো। গত পরশু এসে দাম দেখে ফিরে গেছি। আজ আবার এসেছি। আগে ১ কেজি লাল আঙ্গুর আর ১ কেজি আপেল নিতাম। এখন হাফ কেজি করে নিলাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST