আড়ালে থাকা তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা মঙ্গলবার বলেছেন, আফগানিস্তানের নবগঠিত সরকার শরীয়াহ আইন অনুসরণ করবে। দেশটির ক্ষমতা দখলের পর প্রথম বার্তায় তিনি এ কথা বলেছেন।
ইংরেজি ভাষায় দেয়া এক বিবৃতিতে হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা বলেন, ‘আমি সব দেশবাসীকে নিশ্চিত করছি যে নতুন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দেশে ইসলামি শাসন এবং শরীয়াহ আইন অনুসরণ করার ব্যাপারে কঠোরভাবে কাজ করবেন।’
এই নেতা কখনো জনসম্মুখে আসেননি।
আখুন্দজাদা আফগানদের বলেন, নতুন নেতৃত্ব ‘দীর্ঘস্থায়ী শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন’ নিশ্চিত করবে।
তিনি আরো বলেন, ‘লোকজনের দেশ ত্যাগ করার চেষ্টা করা উচিত হবে না।’
আখুন্দজাদা বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির সাথে ইসলামিক আমিরাতের কোনো সমস্যা নেই।’
‘আপনারা সকলে এ শাসন ব্যবস্থা ও আফগানিস্তানকে শক্তিশালী করতে অংশগ্রহণ করবেন এবং এভাবে আমরা আমাদের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুন:গঠিত করবো।’
ধর্মীয় ছুটি চলাকালে দেয়া এ বার্তায় আখুন্দজাদার পাবলিক প্রোফাইলের ব্যাপারে তেমন কিছুই বলা হয়নি।
তালেবান গ্রুপ ক্ষমতা গ্রহণের পর তাদের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘তিনি কান্দাহারে রয়েছেন।’
অপর এক মুখপাত্র বলেন, আখুন্দজাদার ‘শিগগিরই’ জনসম্মুখে আসার কথা রয়েছে।
তালেবান সরকারের নেতৃত্বে আছেন মার্কিনবিরোধী ইসলামপন্থীরা
আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে তার নেতৃত্বে আছেন পশ্চিমা ও মার্কিনবিরোধী ইসলামপন্থীরা। তারা আফগানিস্তানকে ইসলামিক আমিরাত বলে ঘোষণা করেছেন। বুধবার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
নতুন আফগান সরকারের প্রধান পদগুলোর নিয়ন্ত্রণ এখন ওই সকল ইসলামপন্থী নেতাদের হাতে যারা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। পশ্চিমা মদদপুষ্ট সাবেক আফগান সরকার ও মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে খ্যাতি পাওয়া তালেবান নেতারাই এখন বর্তমান তালেবান সরকারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষের এ নতুন সরকারের নেতৃত্বে আছেন মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। তিনি আফগানিস্তানের তালেবান আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণে তাকে জাতিসঙ্ঘের মাধ্যমে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
তালেবানের অন্যতম সামরিক সংগঠন হাক্কানি গ্রুপের প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে নতুন আফগান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনিও মার্কিনবিরোধী সামরিক অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাকে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে অভিহিত করেছে।
তালেবান কর্তৃপক্ষ পশ্চিমা মদদপুষ্ট সাবেক আফগান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন তিন সপ্তাহ আগে। এরপর তারা এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণা দেন। একটি স্থায়ী সরকার গঠনের জন্য তালেবান কর্তৃপক্ষের এ ঘোষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদিও এ নতুন তালেবান সরকারকে বহু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। কারণ, আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। এছাড়া তালেবান নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি অনেক দেশ।
https://www.youtube.com/watch?v=UxLygqtxIZs&ab_channel=PundroTv