ভয়াবহ ও সিস্টেমেটিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের কারণে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোটে সংস্থাটির মানবাধিকার পরিষদ থেকে রাশিয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। জবাবে রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে আগেই এ পরিষদ ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিষদের দুই তৃতীয়াংশ দেশের সমর্থনে রাশিয়ার পদ সাসপেন্ড করা হয়। পরিষদের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ৯৩টি সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ২৪টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে ৫৮টি দেশ। এর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, কাতার, কুয়েত, ইরাক, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া। এ খবর দিয়েছে জাতিসংঘের অনলাইন ইউএননিউজ।
এতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে যেসব দেশ তার মধ্যে আছে রাশিয়া, চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ইরান, সিরিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি ও রাশিয়ার সেনারা যে আইন লঙ্ঘন করেছে তা নিয়ে বিশেষ জরুরি এই অধিবেশন বসে বৃহস্পতিবার। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের বুচা শহর থেকে হতাশাজনক, হৃদয়বিদারক ছবি প্রকাশিত হয়। রাশিয়ার সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়ার পর রাজধানী কিয়েভের পার্শ্ববর্তী এই শহরে রাস্তায় রাস্তায় লাশের সারি দেখা যায়। গণকবরে শত শত লাশ। এসব ছবি, ভিডিও দেখে বিবেকবান মানুষের আত্মা কেঁদেছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে রাশিয়ার সদস্যপদ সাসপেন্ড করার প্রস্তাবের পূর্বেই ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সের্গিই কিসলিস্তিয়া সদস্য দেশগুলোর প্রতি এতে সমর্থন দিতে আহবান জানান। তিনি বলেন, ইউক্রেনের বুচা ও ডজন ডজন শহরে, গ্রামে শান্তিপূর্ণ হাজার হাজার অধিবাসীকে হত্যা করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। তাদেরকে নির্যাতন করেছে। ধর্ষণ করেছে। অপহরণ করেছে। ডাকাতি করেছে। মানবাধিকারের প্রাথমিক ঘোষণার থেকে এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া ফেডারেশন নাটকীয়ভাবে বহুদূরে সরে গেছে। এ জন্য এ ঘটনাটি ব্যতিক্রম। ওদিকে প্রস্তাবটি ভোট দেয়ার আগে রাশিয়ার উপরাষ্ট্রদূত গেন্নাডি কুজমিন সদস্য দেশগুলোকে পশ্চিমাদের আনা এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার আহবান জানান।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকে কোনো সদস্য রাষ্ট্রকে সাসপেন্ড করার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির শাসনের সময়ে সেখানে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নিপীড়নের কারণে দেশটির সদস্যপদ ২০১১ সালে বাতিল করা হয়।