1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
ইমরান খানই নায়ক ভিডিওসহ - Pundro TV
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন



ইমরান খানই নায়ক ভিডিওসহ

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাব ডেপুটি স্পীকার খারিজ করে দিয়েছেন। আজ সংসদের কার্যক্রম শুরু হওয়া মাত্র নব নিযুক্ত পাক আইনমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, গত ৭ই মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের হুমকি দিয়েছিলেন এবং যার সূত্র ধরে বিরোধী দল ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করে। এতে বিরোধী দলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের যোগসাজশ পাওয়া যায়। তাই মাননীয় স্পীকারের নিকট আবেদন সংবিধানের আর্টিকেল ৫ এর বিধান অনুযায়ী আপনি আজকের অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিন। অতঃপর ডেপুটি স্পীকার কাসিম খান সুরি এই মর্মে রুল জারি করেন যে- No foreign power shall be allowed to topple an elected govt through a conspiracy অর্থাৎ কোনো বিদেশী শক্তির দ্বারা নির্বাচিত সরকারকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে উৎখাত করার অনুমতি দেয়া হবে না। স্পীকারের এই রুল জারি করার পর অর্থাৎ অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করার কয়েক মিনিট পরই ইমরান খান তাঁর কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ঘোষণা দেন যে আমি প্রেসিডেন্টকে সংসদ ভেঙ্গে দেবার জন্য চিঠি দিচ্ছি। অতঃপর প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দেয়ার আদেশ দেন। ফলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
সুতরাং আজকের এই ঘটনার ফলাফল এই দাঁড়ালো যে,
১. বিরোধী দলের অনাস্থা ভোট আয়োজন নস্যাৎ হয়ে গেলো।
২. বিরোধী জোটের নেতা শাহবাজ শরীফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ বানচাল হলো।
৩. ইমরান খান সরকারেরও পতন ঘটলো। যদিও তাঁর সরকারের মেয়াদ আরো ১৮ মাস ছিলো।
সাধারনত দেখা যায় যে, কোনো সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট বিরোধী দলের দাবি মোতাবেক ক্ষমতা ছেড়ে চলে গেলে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে দারুন হৈ চৈ, উল্লাস প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে উল্টো ইমরান খানের পক্ষে জনগন রাস্তায় নেমে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন, সারা পাকিস্তানে আনন্দের বন্যা বইছে।

কিন্তু এমনটা হবার কারণ কি?
এর কারন হলো- পাকিস্তানের ১৩টি দলের বিরোধী জোট কয়েক মাসের জন্য হলেও ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলো। বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বড় বড় দুর্নীতি মামলার শুনানি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। তাছাড়া ক্ষমতায় যেয়ে ইভিএম মেশিনে ভোট ও প্রবাসীদের ভোট প্রদানের আইন বাতিল করতে না পারলে তারা নির্বাচনে সমস্যায় পড়বে। উপরন্তু বিরোধী দল আগাম নির্বাচনের জন্য আদৌ প্রস্তুত নয়। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারনে ইমরান খান এখন পাকিস্তানের ঘরে ঘরে একটি জনপ্রিয় নাম, সুতরাং তাঁর দল নির্বাচনে আগের চেয়ে ভালো ফলাফল করবে।

আজ ইমরান খান জীবনের সেরা ইনিংস খেললেন, আবার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করলেন। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে লড়াইয়ে জিতলেন। তাই ইমরান খানই এখন নায়ক। কিন্তু ইমরান খান কিভাবে বিরোধী দলকে আউট করে দিলেন?

এক্ষেত্রে ইমরান খান এক চমৎকার ক্রিকেটীয় সূত্র Apply করেছেন। যেমন ক্রিকেটে বোলারের খুব ভালো বল ব্যাটসম্যানকে ছেড়ে দিতে হয়। তখন ধারাভাষ্যকার প্রশংসা করে বলে ওঠেন well left আবার এর বিপরীতে বোলারের খারাপ বলকে ছয় মারতে হয়। খুব ভালো বলকে হিট করতে গিয়ে আউট হলে সমর্থকদের কাছে ভিলেন হতে হয়, তেমনি আবার খারাপ বলকে ছয় মারতে না পারলে দর্শকদের ধিক্কার ধ্বনি শুনতে হয়। ইমরান খান এই ক্রিকেটীয় সূত্র তাঁর রাজনৈতিক লড়াইয়ে শতভাগ কাজে লাগিয়েছেন।

এই ক্রিকেটীয় সূত্রের বাইরে রাজনীতির কতগুলো নোংরা সূত্রও আছে। যেমন- তোমার ক্ষেতে যখন শুয়োর ঢুকে পড়ে তখন তুমি কিছু কুকুর ছেড়ে দাও। ইমরান খান অনাস্থা ভোটে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এ ধরনের অনেক সূত্র ব্যবহার করেন।

বলা হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় পাকিস্তানের বিরোধীদল ৮ই মার্চ ২০২২ তারিখে সরকার উৎখাতের অভিযানে নামে । ইমরান খানের পিটিআই দল থেকে অন্তত ২০ জন সংসদ সদস্য বিরোধী জোটে যোগ দেয়। শরীক দলগুলোও ধীরে ধীরে ইমরান খানকে ছাড়তে থাকে। ইমরান একা হয়ে পড়েন। কিন্তু জনতা ইমরান খানের পক্ষে জোয়ারের মতো ছুটে আসতে থাকে। সেনাবাহিনীর প্রধান রহস্যজনকভাবে নিরপেক্ষতার ভান করতে থাকেন। সুপ্রিম কোর্ট ইমরান খানের করা পিটিশনগুলো সুরাহা না করে ঝুলন্ত রাখে। এমন বৈরি পরিস্থিতির মধ্যেও ইমরান ঝানু রাজনীতিবিদের মতো খেলা খেলে দিলেন। তিনি বিরোধী দলকে বুঝিয়ে দিলেন রাজনীতি কত প্রকার ও কী কী?

ইমরান খান বার বার সবার কাছে আবেদন জানাচ্ছিলেন যে, তাকে অপসারনের উদ্দেশ্যে আনীত অনাস্থা ভোট দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সাথে জড়িত। তিনি যদি হেরে যান তবে ইতিহাস কখনোই নব্য মীর জাফর, মীর সাদিকদের ক্ষমা করবে না।

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, পাকিস্তানের অধিকাংশ মেইনস্ট্রিম মিডিয়া ইমরান খানের পক্ষ অবলম্বন করেনি। তারা বিরোধীদের Narrative ফেরি করতে থাকে। অথচ ইমরান খান পরিষ্কারভাবে প্রমান করে দেন যে, যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে উৎখাতের হুমকি দিয়েছে।

তবে পাকিস্তানের মেইন স্ট্রিমের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া বিশেষ করে ইংরেজি দৈনিকগুলো ইমরান খানের বিরোধিতায় নিয়োজিত থাকলেও সোস্যাল মিডিয়া তার পক্ষ নেয়। আর এই সোস্যাল মিডিয়ার তথ্য, উপাত্ত ও বিশ্লেষনগুলি মেইনস্ট্রিম মিডিয়াকে হারিয়ে দিলো।

সবচেয়ে বেকায়দায় পড়ে কিছু ভারতীয় মিডিয়া। তারা গত ২৭ মার্চ ধরে Imran Khan’s Game is Over এই শিরোনামে বিভিন্ন আলোচনা, News, Views, talk show করে যাচ্ছিলো। তারা নিশ্চয় হতাশ হয়েছে।
অতএব ঘটনার সত্যতা জানতে মূল নিউজ দেখতে হবে। শুধুমাত্র Views, analysis কিংবা talk show শুনলে বিভ্রান্ত হতে হবে।
পাকিস্তানের রাজনীতি এখন কোন পথে যাবে?

ইমরান খান প্রাচীন একটা কৌশল Apply করেছেন। আমি খেলবো না, তোমাকেও খেলতে দিবো না। ইমরান খানের পিটিআই বলছে প্রেসিডেন্ট তো পার্লামেন্ট ভেংগেই দিলেন। তাহলে বিরোধী দল ভোটে আসতে ভয় পাচ্ছে কেন? আসলে দেড় বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকার বিরোধী দলীয় প্লান ব্যর্থ হয়েছে।

আর জনগন বলছে মূল্যস্ফীতি, দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতি মানতে রাজি আছি কিন্তু গাদ্দারি মানতে রাজী না। পাকিস্তানের রাজনীতি আগামী দিনগুলোতে উত্তপ্ত থাকবে। ইতিমধ্যেই বিরোধী দল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। তবে স্পীকারের রুলিংকে আদালত চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। অতএব সবার চোখ এখন আদালতের উপর নিবদ্ধ থাকবে।

https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/1299055577266495

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST