বিজ্ঞপ্তিতে রাজাপাকসা বলেছেন, জননিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা এবং সরবরাহ ও জরুরি সেবা নিশ্চিত করার স্বার্থে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসার বাসভবনের সামনে শত শত বিক্ষোভকারী পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল।
বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং কলম্বো ও এর আশপাশে কারফিউ জারি করে।
শ্রীলঙ্কাজুড়ে জ্বালানিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব দেখা দেওয়ার পর অসন্তোষ ধূমায়িত হয়ে উঠেছে।
২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশ শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটির কাছে আমদানিকৃত জ্বালানির দাম পরিশোধ করার মতো পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা নেই। জ্বালানি সংকটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না, পাশাপাশি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জলাধারের পানি বিপজ্জনক মাত্রায় নেমে যাওয়ায় সেখানেও উৎপাদন সংকট দেখা দিয়েছে; ফলে দেশেজুড়ে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের কাছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার পর জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।
এখানে জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত দুই ডজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, তবে কতোজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছে তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
দেশটির পর্যটনমন্ত্রী প্রসন্ন রানাতুঙ্গে সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের প্রতিবাদ অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ক্ষতি করবে।
তিনি বলেন, “শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিতে পড়েছে, এটাই প্রধান ইস্যু। এ ধরনের প্রতিবাদে পর্যটন ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর তা অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে।”
শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত জাতিসংঘের প্রতিনিধি হানা সিংগার হামদি ওই সংঘাতে জড়িত সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
“আমরা পরিস্থিতির উত্তরণ পর্যবেক্ষণ করছি এবং সহিংসতার খবরে উদ্বিগ্ন হয়েছি,” টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন তিনি।
শুক্রবার টানা তৃতীয় দিনের মতো শ্রীলঙ্কার শেয়ার বাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল।