মাটির ব্যাংকে পয়সা জমিয়ে অনেকেই শখের জিনিস কেনেন। তাই বলে আড়াই লাখেরও বেশি টাকা জমিয়ে শখের মোটরসাইকেল কিনে ফেলার কথা সহজে শোনা যায় না।
তবে, এমনই এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন ভারতের তামিলনাড়ুর এক তরুণ।
জানা গেছে, ভূপতি নামে ওই যুবক একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও তাঁর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে, যেখানে তিনি ভিডিও বানান। ভূপতি জানিয়েছেন, ৩ বছর বছর আগে তিনি যখন এই বাইকটি পছন্দ করেছিলেন, তখন এর দাম ছিল প্রায় ২ লাখ টাকা। কিন্তু তখন তাঁর কাছে টাকা ছিল না। স্বপ্ন পূরণের জন্য তখন থেকেই টাকা জমাতে শুরু করেন তিনি। নিজের জমানো টাকা হিসেবে নোটকেই কয়েন করে জমাতেন তিনি।
ভূপতি জানিয়েছেন, তাঁর জমানো নোটগুলিকে কয়েন করতে যথেষ্ট পরিশ্রম হয়েছে তার। মন্দির, হোটেল ও চায়ের দোকানে গিয়ে নোট ভাঙতি করে খুচরো জমা করতে থাকেন তিনি। এভাবে তাঁর কাছে ১ টাকার কয়েনের পাহাড় জমে যায়। অবশেষে তিনি বাইকের অন-রোড দামের সমপরিমাণ কয়েন জমিয়ে ফেলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি গত মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ওই যুবকের নাম ভি ভূপাথি। বয়স ২৯ বছর। বাড়ি তামিলনাড়ু রাজ্যের সালেম এলাকায়।
গত শনিবার তিনি বাড়ির পাশের একটি শোরুমে মোটরসাইকেল কিনতে যান। জানা গেছে, সালেমের একটি শোরুম থেকে “বাজাজ ডোমিনার ৪০০” মডেলের বাইকটি কেনার জন্য সঙ্গে নিয়ে যান ২ লাখ ৬০ হাজার ১ রুপির মুদ্রা। এ জন্য তাঁকে রীতিমতো গাড়ি ভাড়া করতে হয়েছিল। মোটরসাইকেল কেনার পর যখন মূল্য পরিশোধের পালা আসে, তখন ওই শোরুমের বিক্রয়কর্মীদের চোখ কপালে ওঠে। যেহেতু সচল মুদ্রা নিতে যে কেউ বাধ্য, তাই তাঁরা আর মানা করতে পারেননি। ওই শোরুমের পাঁচজন কর্মী ও ভি ভূপাথির চারজন বন্ধু মিলে এসব মুদ্রা গুনতে বসেন। টানা ১০ ঘণ্টায় তাঁরা ২ লাখ ৬০ হাজারটি মুদ্রা গুনে শেষ করেন। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে শখের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরেন ভি ভূপাথি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভূপতি কয়েনগুলো একটি ভ্যানে করে শোরুমে নিয়ে এসেছিলেন এবং ঠেলাগাড়ি দিয়ে শোরুমে কয়েনগুলো নামানো হয়েছিল। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই এক টুইটার পোস্টে শেয়ার করেছে, ২৯ বছর বয়সী ভূপতির এই কাণ্ড ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
শোরুমের ব্যবস্থাপক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন। “ব্যাংকে ১ লাখ রুপি গণনা করার জন্য কমিশন হিসেবে ১৪০ রুপি চার্জ করা হবে। আমরা যখন এক টাকার কয়েনে ২.৬ লাখ রুপি দেবো তখন তারা কীভাবে তা গ্রহণ করবে,”
“তবে, ভূপতির বাইক কেনার স্বপ্নের কথা বিবেচনা করে আমি অবশেষে মেনে নিয়েছি,”
ভূপতি পিটিআই-কে বলেন “আমি বাইকের শোরুম ম্যানেজারকে আশ্বাস দিয়েছিলাম যে কোনো অসুবিধা হলে এক টাকার কয়েনকে কারেন্সি নোটে রূপান্তর করার দায়িত্ব নেব। চলমান ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের কারণে, মনে হচ্ছে আমাকে সেগুলো নোটে রূপান্তর করতে হবে,” জানা গেছে, একদিনের মধ্যে তিনি এক টাকার কয়েনকে ৪০ হাজার রুপিকে নোটে রূপান্তর করতে পেরেছেন।
https://www.facebook.com/watch?v=4898132543565684