খেলারমাঠে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি এ.এ.উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। এই দুই জন দোকান ঘরগুলোর নির্মাণ করে অর্থ পকেটস্থ করছেন বলে অভিযোগ করেন, ওই স্কুলের দাতা সদস্য আবু সালেহ স্বপন।
বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ১১২ জনের স্বাক্ষতির একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর জমাও দিয়েছেন আবু সালেহ স্বপন। তবে বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে অস্বীকার করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। এদিকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছেন উল্লেখ করে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, আপনারা সরেজমিনে দেখে সংবাদ করেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো না।
অভিযোগকারী ওই স্কুলের দাতা সদস্য আবু সালেহ স্বপন আরো বলেন, গোসাইবাড়ি এ.এ.উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির শফিকুল ইসলাম স্কুলের জায়গায় দোকান নির্মাণ করে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় লিজ দিচ্ছেন। এই টাকার বেশির কিছু অংশ স্কুল ফান্ডে জমা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা তারা পকেটস্থ করছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছে।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলেরমাঠে বেশ করেকটি দোকান নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। পূর্বে আরো ২২০টির মত দোকান নির্মাণ শেষে বিভিন্ন জনের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। ওই দোকানগুলো এখন চলমান। স্কুলের নতুন ভবনের পিছনের দেয়ার ঘেঁষও দোকান ঘর তোলা হয়েছে। ফলে ক্লাশ রুমে বাইরের আলো ঢুকছে না। এমনকি প্রধান শিক্ষকের রুমের জানালাও বন্ধ হয়ে আছে দোকানঘরে আড়ালে। এতে ক্লাসে আলো স্বপ্লতা নিয়ে ক্লাশ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীরা বেশি বিপদে পড়ে।
ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাজিয়া আফরিন, ইংলিশ শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, কামরুন্নাহার এবং গোসাইবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রানার সাথে কথা বললে তারাও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তারা বলেন স্কুলের সম্পত্তি নিয়ে কি হচ্ছে আমরা কেউ জানি না। আমাদের এসব বিষয় নিয়ে কোন কিছুই জানানো হয় না। হয় না কোন পরামর্শ মিটিংও। তারা দাবী জানান, স্কুলের সামনে মাঠ নষ্ট করে যে দোকানগুলো নির্মাণ হচ্ছে এগুলো দ্রুত বন্ধ করে মাঠ পরিস্কার রাখা হোক। মাঠের সৌন্দর্য নষ্ট হলে স্কুলের পরিবেশও নষ্ট হয়ে যাবে।
এবিয়য়ে গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বলেন মাঠের উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণ পাশের জায়গা অনেক আগেই দখল হয়ে দোকান ঘর তুলেছে স্কুল কমিটি। এখন নতুন করে যে ঘরগুলো তোলা হচ্ছে তাতে স্কুলে প্রবেশের মূল রাস্তাটি সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এতে স্থানীয় কিশোর-তরুণদের খেলা ধুলায় ব্যাত্যয় ঘটছে। তিনিও এই দোকানঘরগুলো নির্মাণ বন্ধ করে মাঠ পরিস্কার রাখার দাবী জানান।
এ বিষয়ে সরেজমিন খোঁজ নিতে স্কুলে গেলে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান কৌশলে দ্রুত তার অফিস থেকে বের হয়ে যান। পরে তার মুঠোফোনে যোগযোগ করার চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে গোসাইবাড়ি এ.এ.উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির শফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্কুল মাঠের দোকান নির্মাণ করা হয়েছে এটা সঠিক। তবে ওই দোকান ঘরগুলোর লিজের টাকা স্কুলমাঠের সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া মার্কেটের অন্যান্য ঘরগুলোর ভাড়া উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ সঠিক নয়। বরং একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ভাড়া উত্তোলণের জন্য। তিনি রশিদমূলে টাকা আদায় করে স্কুলের ব্যাংক একাউন্টে জমা করেন। জমাকৃত টাকা আত্মসাত করার সুযোগ নেই।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/481912396872503