গতবছর করোনা শুরুর পর থেকেই পরপর দু’বার পরিবর্তন এসেছে ভারতে দুর্গাপূজায় মূর্তির গড়নে । করোনার সময় চিকিৎসক-নার্সসহ চলতি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বদলে গেছে দেবী দুর্গার মূর্তি। তবে এবারে দুর্গামূর্তির গোটা ব্যকরণই বদলে দিয়েছে ভারতের মালদাহের একটি পূজামণ্ডপ।
আনন্দবাজার পত্রিকায় জানা যায়, মালদাহের হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামে দুর্গাপূজার উদ্যোক্তা স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। আর তাই দলের প্রচারণা স্বরূপ দেবীর পরিবর্তে বসানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মূর্তি। তবে চিরাচরিত দুর্গামূর্তির অস্তিত্ব নেই সেখানে। নেই অসুর। এছাড়া লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশ এমনকি উধাও দেবীর বাহন সিংহও । এর পরিবর্তে একাই দাঁড়িয়ে আছে মমতার মূর্তি। দশহাতে বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগের প্ল্যাকার্ড।
অবশ্য মূল মূর্তির দু’পাশে রাখা রয়েছে, দুটি আলাদা ও ছোট মূর্তি সেগুলোও মমতার। এমনকি গোটা মণ্ডপজুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে মমতার বিভিন্ন রূপের প্রতিচ্ছবি। আছে মমতার একাধিক মূর্তি। ফুটবলাকৃতি মণ্ডপে রয়েছে হুইল চেয়ারে বসা মমতাও। আছে ‘ত্রিপুরায় খেলা হবে’র বার্তা।
এই মূর্তির কোথাও অস্তিত্ব নেই চিরাচরিত দুর্গামূর্তির । নেই ত্রিশুল বা রক্তরাঙা চোখ। আর তাই মণ্ডপে দর্শণার্থী বা ভক্তদের ভিড় হলেও দানা বেঁধেছে বিতর্ক। যদিও এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে মালদাহের সাধারণ জনগণের মধ্যে। মিলছে ইতিবাচক-নেতিবাচক সব রকমেরই মন্তব্য ।
দুর্গামূর্তির দেখা নেই। তার বদলে দশভুজার জায়গা নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। দুর্গার পাশাপাশি চোখে পড়ছে না লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশ বা অসুরও। দেবীর বাহন সিংহকেও ধারেকাছে দেখা যায়নি।
মমতার মূর্তির পাশে আরও দু’টি মূর্তি রয়েছে। সেগুলোও মমতার। দশভুজারূপী মমতার হাতে ধরা কন্যাশ্রী, যুবশ্রী বা শিক্ষাশ্রীর মতো একাধিক সরকারি প্রকল্পের নাম লেখা কার্ড। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে এমনই অভিনব দুর্গা পূজার মূর্তি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা।
হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামে দুর্গা পূজার উদ্যোক্তা স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দলনেত্রীকে দশভুজা হিসাবে পূজা করা ছাড়াও তার নানা রূপের মূর্তিও রয়েছে পুরো মণ্ডপজুড়ে। ফুটবলাকৃতি মণ্ডপে রয়েছে হুইল চেয়ারে বসা মমতাও। রয়েছে ‘ত্রিপুরায় খেলা হবে’র বার্তাও।
তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খানের নেতৃত্বে এলাকায় গণেশ পূজার সময়ও অন্য রকম পূজার আয়োজন হয়েছিল। ওই মণ্ডপে গণেশকে কোলে বসিয়ে মমতাকে দেবী দূর্গার রূপ দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি।
এবারও দুর্গা পূজাতেও মমতার বন্দনা করা হচ্ছে। বুলবুল খান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের কষ্ট পেতে দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। রেশনে খাদ্যসামগ্রী বিনামূল্যে দেওয়া হোক বা কন্যাশ্রীসহ নানা জনমুখী প্রকল্প, সবই বাস্তবায়িত করেছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ভোটে পশ্চিমবঙ্গের খেলা শেষ। এবার গোটা দেশে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। যাতে এসব প্রকল্পের সুবিধা পান প্রত্যেক দেশবাসী। আমাদের মণ্ডপে দশভুজারূপে থাকছেন মমতা ব্যানার্জী। সেই সঙ্গে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, যুবশ্রী, খাদ্যসাথী এ সব প্রকল্পের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।