কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগীদের জন্য নির্ধারিত বিকাশ করা সিমকার্ড আটক রেখে টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে বয়স্ক ও বিধবাদের কাছ থেকে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ভাতা কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা নেন। এরপর তাদের মোবাইল নম্বরে বিকাশ খোলার জন্য তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার পর সিম ও পিন কোড নিজের কাছেই রেখে দেন। পরে ভুক্তভোগীরা বিকাশের সিম ও পিন কোড ফেরত চাইলে ভাতার কার্ড হবে না বলে হুমকি দেন আনোয়ার হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, একথা শোনার পর তারা নিরুপায় হয়ে সিম জমা রাখেন। এর কিছুদিন পর জানতে পারেন তারা বয়স্ক ও বিধবা ভাতার তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং বিকাশ নম্বরে জনপ্রতি ৩ হাজার করে টাকা সংযুক্ত হয়েছে। তারা সিম ও পিন কোড ফেরত চাইলে ওই সদস্য ২ হাজার করে টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী কুদ্দুছ খান, সাহের আলী, ফজিলা বেওয়া দেশের প্রথমসারির এক গণমাধ্যমকে বলেন, আনোয়ার মেম্বার সিমে বিকাশ করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে সিম জমা নিয়ে ছবি তুলে সিমে বিকাশ করে দেয়। পরে আর সিমও দেয়নি, বিকাশের পিন কোডও দেয়নি। এখন ৩ হাজার টাকা থেকে নামপ্রতি ২ হাজার করে টাকা দাবি করছে। টাকা না দিলে সিম ফেরত দেবে না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে ওই ইউপি সদস্য বলেন, আমি তাদের কাছে সিম চাইনি। তারাই নিজে থেকে আমাকে বিকাশ করার জন্য সিম জমা দিয়েছে। অনেকেই ভুল নম্বর দিয়েছিল। তাই সমস্যা সমাধানে সিমগুলো আমার কাছে ছিল। তবে আমি তাদের সিম নিয়ে যেতে বলেছি।
তিনি আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত করে আমার নামে মিথ্যা বলছে। তবে এখানে একটি মসজিদ মেরামতের জন্য আমি নিজে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। তাদেরও বলেছি আপনারা যে যা পারেন কিছু করে টাকা দেন। যাতে সবার সহযোগিতায় মসজিদের কাজ সম্পন্ন হয়।
অন্যদিকে এ বিষয়ে জানতে, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালেবকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ইউএনও নূর আহমেদ মাছুম এ বিষয়ে বলেন, সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সালেকুল ইসলাম এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, আমি ব্যস্ততার কারণে এখনো তদন্ত করতে পারিনি। তবে দু-এক দিনের মধ্যেই তদন্ত করে ইউএনও স্যারকে প্রতিবেদন জমা দেব।