বগুড়ায় রোপা আমন ধানের চারা রোপনের ২০ দিনের ব্যবধানে ফুল এসেছে গাছে । আবার থোড় হয়েছে অনেক জমির চারা । অন্তত ২৫ বিঘা জমিতে রনজিত জাতের ধানের চারা লাগিয়ে বিপাকে পড়েছে বগুড়া সদরের তিনটি গ্রামের ১৫ জন চাষী। কৃষি বিভাগ বলেছেন, এই জাতের ধান রোপনে সবসময় নিরুসাহিত করে থাকেন তারা। মুনাফালোভী এক শ্রেণীর ব্যবসায়িরা ভারতীয় এই জাতের বীজ এনে সহজ সরল চাষিদের কাছে বিক্রি করায় দেখা দিয়েছে এই সমশ্যা ।
অধিক ফলনের আশায় রোপা আমন ধানের চারা লাগিয়ে দিশেহারা বগুড়া পৌর সভার ঢাকন্তা,নিশ্চিন্তপুর ও শেখ পাড়ার ১৫ জন চাষী। ক‘মাস আগে স্থানীয় নিশ্চিন্তপুর বাজারের রবি ট্রেডা থেকে ধান বীজ ক্রয় করেন, সালাউদ্দিন ঝিনুক,আবু সাঈদ,নাজমুল,গোলাম রব্বানীসহ আরো অনেকেই।
রবি ট্রেডাসের মালিক রবিউল ইসলামের কাছ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে নিয়ে যান সাদা রনজিদ জাতের ধান বীজ। ফেলা হয় বীজ তলায়। উপযুক্ত সময় হলেই জমিতে লাগান চারা। তবে ১৫-২০ নিদেন মাথায় গাছ না ছোপালেও বেরিয়েছে ফুল।
অসময়ে ধান গাছে ফুল আসায় চোখে অন্ধকার দেখছেন চাষিরা। ধার দেনা করে জমি লাগিয়ে সেই জমির ফসল ঘরে তুলতে না পেরে দু:চিন্তায় পড়েছেন তারা।এদিকে নতুন করে রোপন করতে গিয়ে পড়েছেন চারা সংকটে। যারা চারা সংগ্রহ করে লাগাছেন তারাও আছেন সংশয়ে। শেষ সময়ে লাগানো জমিতে কতটুকু ধান ফলবে তা নিয়ে বেড়েছে দু:চিন্তা।
অপরদিকে স্থানীয় চাষীদের কাছে ধান বীজ বিক্রি করে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ি রবিউল ইসলাম রবি। চাষিরা প্রতিদিনই ক্ষতিপূরনের দাবি নিয়ে আসছেন তার কাছে।
তবে রবি ট্রেডাস মালিক রবিউল ইসলাম বলছেন, শহরের তিন নম্বর রেল গেটের মানতাশা বীজ ভান্ডার থেকে রশিদ মূল্যে বীজ কিনেছেন তিনি। বিষয়টি মানতাশার মালিক আবুল কালাম মালেকে জানালে দিচ্ছেন নানা বাহানা।
রবিউল ইসলাম রবি,স্বত্তাধিকারী,মেসার্স রবি ট্রেডাস,বগুড়া
এদিকে মানতাশা বীজ ভান্ডারের মালিক আবুল কালাম আজাদ মালেকের বক্ত্য নিতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও পাওয়া যায়নি তাকে। তবে দোকানের ম্যনেজার জানিয়েছেন ৪ শ কেজি সাদা রনজিদ ধান বীজ বিক্রি করেছেন তার। অভিযোগও এসেছে কিছু এলাকা থেকে ।
মানতাশা বীজ ভান্ডারের ম্যানেজার ও বীজ প্রত্যায়ন ও তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা জানালেন,দায়সারা কথা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,বগুড়ার আঞ্চলিক পরিচালক ইউসুফ রানা মন্ডল জানান, অসময়ে ধান গাছে ফুল আশার জন্য মুনাফা লোভী বীজ ডিলারদের দায়ি করে এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
খরা,বন্যার পাশা পাশি সার, বীজ ও কীটনাশকে ভেজালের কারনে বার বার ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে অর্থনীতির চালিকা শক্তি কৃষি খ্যাতে ব্যপক ধস নামতে পারে এমন আশংকা কৃষিবিদদের।