1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
হুমায়ূন আহমেদ: জাদুকরহীন ১১ বরষা - Pundro TV
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১০ পূর্বাহ্ন



হুমায়ূন আহমেদ: জাদুকরহীন ১১ বরষা

বিনোদন ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩

তার প্রিয় ঋতু ছিল বরষা। তাই গল্প-উপন্যাস থেকে নাটক, সিনেমা কিংবা গানে, বৃষ্টিবন্দনা করেছেন বহুবার, বহু ঢঙে। আর এই বৃষ্টিময় বরষা দিনেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন অনন্তলোকে। কিন্তু চলে যাওয়ার আগে সমৃদ্ধ করে গেছেন বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভুবন।

তিনি হুমায়ূন আহমেদ। যাকে এক শব্দে জাদুকর বলেন ভক্তরা। কারণ কথাসাহিত্যে তিনি যে মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেছেন, নির্মাণে যে নিজস্ব আলো জ্বালিয়েছেন, তা চির ভাস্বর। তাই বছর ঘুরে বরষা এলেই তার বিদায়ের বিষাদ ঘিরে ধরে ভক্তদের।

আজ বুধবার (১৯ জুলাই) সেই বিষণ্ণ বিদায়ের দিন। ২০১২ সালের এই দিনে মারা গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। সেই হিসাবে আজ তার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী।

প্রতি বছরই তার প্রয়াণ দিনে পারিবারিকভাবে দোয়ার ব্যবস্থা থাকে জন্মস্থান নেত্রকোনা ও তার গড়া প্রিয় জায়গা নুহাশ পল্লীতে। এছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে থাকে তার নির্মিত নাটক, সিনেমা ও সাহিত্য নিয়ে বিশেষ আয়োজন। ব্যতিক্রম হচ্ছে না এবারও।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুরে জন্মেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কলমের আঁচড়ে তিনি যে গল্পজগত তৈরি করেছেন, তা আজও সবার কাছে বিস্ময় হয়ে আছে। তার রচিত তিন শতাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। যেগুলো দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের পাঠকের কাছেও হয়েছে সমাদৃত।

বিনোদন জগতে হুমায়ূন আহমেদ কালজয়ী হয়ে আছেন তার অনবদ্য সব নির্মাণ ও রচনার সুবাদে। এই অধ্যায়ের সূচনা হয় আশির দশকে। নির্মাতা নওয়াজীশ আলী খানের পরামর্শে টিভি নাটক লেখা শুরু করেন হুমায়ূন আহমেদ। প্রথম কাজটি ছিল ‘প্রথম প্রহর’। এটি ১৯৮৩ সালে বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল।

এর দু’বছর পর ১৯৮৫ সালে ‘এইসব দিনরাত্রি’ ধারাবাহিক দিয়ে সাফল্যের আকাশ স্পর্শ করেন হুমায়ূন আহমেদ। ধারাবাহিকটি ওই সময়ে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। এরপর ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘আজ রবিবার’, ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’সহ বহু নন্দিত নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি। এসব নাটকের গল্প, সংলাপ, নির্মাণশৈলী কিংবা শিল্পীদের অভিনয় এখনও দর্শকের মনে গেঁথে আছে। এমনকি নতুন প্রজন্মের দর্শকের কাছেও এসব কাজ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

নব্বই দশকে চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দেন হুমায়ূন আহমেদ। তার নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। এরপর তিনি একে একে নির্মাণ করেছেন ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘আমার আছে জল’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ ও ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ সিনেমাগুলো। এসব সিনেমায় ব্যবহৃত সিংহভাগ গান রচনা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ নিজেই।

হুমায়ূন আহমেদ প্রায় নব্বইটি একক নাটক পরিচালনা করেছিলেন। এগুলোর বেশিরভাগই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে এবং এই সময়ে এসেও সেই পুরনো নাটকগুলো দেখে এবং মুগ্ধতা প্রকাশ করে দর্শক। তার নির্মিত কয়েকটি একক নাটক হলো- ‘আমরা তিনজন’, ‘এই বরষায়’, ‘এনায়েত আলীর ছাগল’, ‘কনে দেখা’, ‘খোয়াব নগর’, ‘গৃহসুখ প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘চৈত্র দিনের গান’, ‘ছেলে দেখা’, ‘নীতু তোমাকে ভালোবাসি’, ‘নুরুদ্দিন স্বর্ণপদক’, ‘পুষ্পকথা’, ‘বাদল দিনের প্রথম কদমফুল’, ‘বুয়া বিলাস’, ‘সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘সবাই গেছে বনে’ ইত্যাদি।

কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, গীতিকার, পরিচালক বিভিন্ন বিভাগে তিনি মোট আটটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন সম্মাননা অর্জন করেছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST