বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমেরিকার ভিসানীতিটি লজ্জার; আর এ জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ সরকার। তাই এ সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
তিনি বলেন, বগুড়ার কৃতী সন্তান জিয়াউর রহমান ঘোষণা করেছিলেন বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। আর তারেক রহমান লন্ডন থেকে দেশের লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিএনপি বড় দল এ কারণে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকলেও দেশের দুর্দিনে স্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ‘রাজপথে ফয়সালা’ আন্দোলনের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে ১০ দফা দাবি আদায়ে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ সরকার ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করেছে। তাই এ সরকারের অধীনে কোনো দিন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে এবং ভোটের অধিকার ফিরবে না। তাই শেখ হাসিনার সরকারকে তাড়িয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন জনদাবিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিচার বিভাগ দলীয়করণ করেছে। তাদের মিথ্যা ও সাজানো মামলায় সাজা হওয়ায় তারেক রহমান প্রবাস জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও জেলে রয়েছেন। খালেদা জিয়াকে মুক্ত ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। নয়তো গণতন্ত্র উদ্ধার হবে না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিদেশে টাকা পাচার করছেন, ব্যাংক দেউলিয়া করে দেশকে ধ্বংস করেছেন। দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক হওয়ায় মানুষ ঠিকমতো খেতে পারেন না। মধ্যবিত্তরা দরিদ্রে পরিণত হচ্ছেন।
বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনার সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সহিদ উন নবী সালামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাহবুবর রহমান, সাবেক এমপি ও উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম, সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন, ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, জেলা যুবদলের আহবায়ক খাদেমুল ইসলাম খাদেম প্রমুখ।
বাধা ও গাড়ি তল্লাশি: সমাবেশে আসার পথে তাদের বাধাদান ও গাড়ি তল্লাশির অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মীরা জানান, বিভিন্ন পয়েন্টে তাদের গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির নামে হয়রানি করা হয়। তবে দায়িত্বশীল এক পুলিশ কর্মকর্তা বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ছাত্রলীগের অবস্থান: সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে সমাবেশ চলাকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহার নেতৃত্বে শহরের সাতমাথায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সজীব সাহা বলেন, বিএনপি জনসমাবেশের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করলে প্রতিহত করা হবে। বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বলেও জানান।