মাহে রামাযান কোরআন নাযিলের মাস। এ মাস আত্মশুদ্ধির মাস। আত্মসংযমের মাস। পাপ বর্জনের মাস। নেকীর পাল্লা ভারী করার মাস। সর্বোপরি সবধরনের পুণ্য করাই হচ্ছে এ মাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বারো মাসের মধ্যে আফযল মাহিনা হচ্ছে- ‘রামাযানুল মুবারক’- খোদায়ী নেয়ামতে ভরপুর এ মাস। এগারো মাসের তুলনায় এ মাসের বরকত যে সবচেয়ে বেশি তা একমাত্র রোজাদাররাই বুঝতে সক্ষম হচ্ছেন। সারাদিন পানাহার করবে বলে যে ব্যক্তি রোজা ছেড়ে দিলো তার যে কত কষ্টে দিন অতিবাহিত হয় একমাত্র সেই টের পায়। মুসলিম উম্মাহ্র জীবন চলার পথে প্রয়োজন হয় খোদায়ী রহমত, মাগফিরাত, আর নাজাতের ফুয়ারার।
তাই মহানবী সা: এর জবান মুবারকে এ মাসকে তিন ভাগে বিভক্ত হওয়ায় ঘোষণা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রামাযান মাস। যার প্রথম দশ দিন রহমতের। দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাতের । আর শেষ দশদিন নাজাতের।’ নাজাত পাওয়ার আশায় বাকি দিনগুলো গুনছি। প্রশ্ন করি আমার অশান্ত দিলকে। রহমত আর মাগফিরাতের হিসেব কীভাবে যে মিলাই। পেরেশান হৃদয় আমার। কী আমল করেছি আমি। নেক আমলে প্রতিযোগিতামূলক পদচারণা হয়েছে কি এমাসে। আমি কি নাজাতপ্রাপ্ত বান্দাদের তালিকায় স্থান পেয়েছি? ভয় হচ্ছে। খাওফে খোদায় মন আমার ভরপুর হয়ে আছে। হিসাব মিলাতে পারছি না। তবুও নজর রাখি সূরা যুমারের এই আয়াতাংশের দিকে যেখানে
রাহমাতুললিল আলামিন ইরশাদ করেছেন- ‘লা-তাক্বনাতু মির রাহমাতিল্লাহ’- তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়োনা। কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ হলো।
আবু দাউদ শরীফের এক হাদিসে বলা হয়েছে- যেখানে বিশ্বনবী সা: ইরশাদ করেছেন ‘ইয়াস্-সিরু ওয়ালা তুআসসিরু, বাশশিরু ওয়ালা তুনাফফিরু’- যার অর্থ হলো- ‘সহজ করো, কঠিন করো না। সুসংবাদ দাও ভাগাইওনা।’ এটার মর্মকথা যদি মুসলিম উম্মাহ্ উপলব্ধি করতে পারে তবে মহান প্রভুর গোলামী করা সহজ হবে। হেদায়াতের দ্বার উন্মোচিত হবে। নাজাত প্রাপ্তি সহজ হবে। আজকের দিনগত রাত ২৫শে রমজানের রাত যা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রি। অতএব হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী আজকের রাতে আমরা সবাই শবেকদরের তালাশের মানসে পুরো রাত্রিটা ইবাদতে কাটিয়ে দেই। বলা যায় না যদি এই রাত আল্লাহ্ তা’আলার কাছে শবেকদর হিসেবে গণ্য হয়ে যায়।