1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
ইসির সংলাপে ডাক,সরকার ও ইসির নতুন কৌশল ধারনা বিএনপিসহ সমমনা দলের - Pundro TV
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৬ পূর্বাহ্ন



ইসির সংলাপে ডাক,সরকার ও ইসির নতুন কৌশল ধারনা বিএনপিসহ সমমনা দলের

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩

নির্বাচন কমিশন (ইসি) নতুন করে সংলাপের যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, সেটাকে ‘সরকার ও ইসির নতুন কৌশল’ বলে মনে করছে বিএনপি। তবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট ও দলগুলোকেও আলাদাভাবে মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। দু–এক দিনের মধ্যে এই দলগুলোর কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ ছাড়া ইসি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলসহ নির্বাচনের অংশীজনদের নিয়ে গুচ্ছ সংলাপের পরিকল্পনাও করছে। বিএনপির নেতিবাচক অবস্থানের মুখে নির্বাচন কমিশন আবারও একটি অর্থহীন প্রক্রিয়ার দিকে যাচ্ছে, নাকি এটি কমিশনের কোনো কৌশল—এ নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকদের চাপ সামলানোর অংশ হিসেবে ইসি এ উদ্যোগ নিয়েছে কি না, সে আলোচনাও আছে।

যদিও ২৩ মার্চ আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য ইসির আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তা নাকচ করে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। এর এক দিন পর গত শনিবার এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, ‘সরকার আবারও ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনের পাঁয়তারা শুরু করেছে। তার মধ্যে লেটেস্ট কৌশল হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের আমাদের (বিএনপি) একটা চিঠি দেওয়া।’ এ বিষয়ে আজ সোমবার বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপর ইসির চিঠির জবাব দেওয়া হবে বলে দলটির নেতারা বলছেন।

তবে বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনের শরিকদের সবাই নির্বাচন কমিশনের আলোচনায় অংশ নেওয়ার বিষয়ে নেতিবাচক নয়। কেউ কেউ আলোচনা বা সংলাপে যাওয়ার পক্ষে মনোভাব দেখাচ্ছেন। বিএনপির মিত্রদের আলাদাভাবে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে দলটিকে একধরনের চাপে ফেলার চেষ্টা রয়েছে। এটিকে ইসির কৌশল হিসেবে দেখছে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান অবশ্য গণমাধ্যমকে বলেছেন, তাঁদের এই উদ্যোগের পেছনে ভিন্ন কোনো কৌশল নেই। অন্যতম একটি বড় দল হিসেবে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মনোভাব জানার তাগিদ থেকেই তাদের সঙ্গে কমিশন মতবিনিময় করতে চাইছে। একই সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে থাকা দলগুলোর বক্তব্যও জানা প্রয়োজন বলে কমিশন উপলব্ধি করছে। সে কারণে ওই দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তিনি জানান, এই আমন্ত্রণে বিএনপির শরিকেরা দলগতভাবে কমিশনের আলোচনায় অংশ নিতে পারে। আবার চাইলে তারা জোটগতভাবেও যেতে পারে। এমনকি অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও হতে পারে। নির্বাচন কমিশন আলোচনার জন্য সব পথ খোলা রাখার কথা বলছে।

বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের কারণে সরকারের ইঙ্গিতে ইসি এখন আলোচনার কথা বলছে। তাঁরা মনে করছেন, সরকার এবং ইসি দেখাতে চাইছে যে বারবার আলোচনায় আমন্ত্রণ করা হলেও বিএনপি আসছে না। অর্থাৎ বিরোধী দল আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী নয়। আর এ ধরনের কৌশল নিয়ে সরকার এবং কমিশন দায় এড়াতে চাইছে।

তবে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলের নেতার সঙ্গে কথা বললে, তাঁরা আলোচনার বিষয়টি সরাসরি নাকচ করছেন না। যদিও তাঁরা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি এবং ইসি নিয়ে অনাস্থার কথা বলছেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না  গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইসি সুনির্দিষ্ট কোনো অ্যাজেন্ডা দিয়ে আলোচনার কথা বলছে না। কোনো অ্যাজেন্ডা দেওয়া হলে তখন আমরা তা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’ গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির অবস্থানও একই রকম। তিনিও  গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইসি তাঁদের আমন্ত্রণ জানালে তাঁরা আলোচনা করে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

তবে গণতন্ত্র মঞ্চের আরেক শরিক গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক ইসির এবারের সংলাপের উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখেন। তিনি  গণমাধ্যমকে বলেন, নির্দলীয় সরকারের রাজনৈতিক দাবি এবং ইসি নিয়ে তাঁদের বক্তব্যগুলো আলোচনায় অংশ নিয়ে তুলে ধরা প্রয়োজন।

বিএনপির নেতাদের অনেকে মনে করেন, তাঁদের সঙ্গে থাকা দলগুলোর কোনো কোনোটার নিবন্ধন না থাকলেও আমন্ত্রণ জানিয়ে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা হতে পারে। বিএনপির ওপর একটা চাপ

তৈরির লক্ষ্যে সেটা করতে পারে। সেসব বিবেচনা করেই বিএনপি সংলাপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা এখন পর্যন্ত সংলাপে অংশ না নেওয়ার অবস্থানেই রয়েছেন।

আলোচনার চেষ্টা করে যাবে ইসি

ইসির এ উদ্যোগকে ‘সরকারে নতুন কৌশল’ বলে বিএনপি যে বক্তব্য দিচ্ছে, সেটা মানতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ  গণমাধ্যমকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে এ উদ্যোগ নিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের বক্তব্য হচ্ছে, বিদেশি কূটনীতিক বা সরকার কোনো দিক থেকে ইসির ওপর কোনো চাপ নেই। তাঁরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নিজেদের তাগিদ থেকে বিএনপিকে আলোচনায় ডেকেছেন। এখন বিএনপি না এলেও নির্বাচনের আগপর্যন্তই ওই দলের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করে যাবে ইসি।

আস্থার অভাব রয়ে গেছে

নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখনো যার যার অবস্থানে অনড়। বিএনপি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইছে। আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী, তথা বর্তমান সরকারের অধীনেই ভোট হবে বলছে। এই বিরোধ নিয়ে ইসির করার কিছু নেই। যার কারণে বিএনপি নেতারা ইসির সঙ্গে আলোচনাকে ‘অর্থহীন’ বলে আসছেন।

এর আগে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছিল ইসি। তখন ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৭টি দল সংলাপে অংশ নিয়েছিল। ওই সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ ১২টি দল।

রাজনৈতিক সমস্যা যা-ই থাক না কেন, ইসির ব্যাপারে বিএনপি এবং দলটির আন্দোলন সঙ্গীদের আস্থার অভাব রয়ে গেছে। ইসি এখন পর্যন্ত আস্থার জায়গাটা তৈরি করতে পারেনি বলা যায়। বর্তমান ইসি এক বছরের বেশি সময়ে সংসদের শূন্য আসনে উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারব্যবস্থার যেসব নির্বাচন করেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রশ্ন রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST