খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বাবুর্চি পদে চাকরির জন্য ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরি প্রার্থীকে দিয়েছিলেন এএসআই মিরান শেখ (বিপি-৮২০২০৮০৯২৪)।
বিনিময়ে ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়েছিলেন টাকা। এ ঘটনায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স তদন্ত শেষে সোমবার মিরানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। বুধবার বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। মিরানের সর্বশেষ কর্মস্থল ছিল মৌলভীবাজারের জুড়ী থানা। তার বাড়ি খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ভান্ডারকোটে।
জানা যায়, এএসআই মিরান সাতক্ষীরা জেলায় কর্মরত থাকার সময় কাশেমপুর এলাকার মো. কামরুজ্জামানের কাছ থেকে তার বড় ছেলে মেহেদী হাসানকে খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বাবুর্চি পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছিলেন। ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মিরানের নিজ নামের সোনালী ব্যাংকের হিসাবে (২৯০৬৬৩৪০৫৫৩১৪) ৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা এবং একই বছরের ৭ অক্টোবর ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হিসাবে (১২০১০৩০১৬৭২৩৫) ২ লাখ টাকা নেন। এসব টাকার জামানত বাবদ কামরুজ্জামানকে এএসআই মিরান তার কমিউনিটি ব্যাংকের নিজ নামের একটি চেক স্বাক্ষর করা অবস্থায় প্রদান করেন। এরপর মিরান পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার (পিটিসি), খুলনার নাম ব্যবহার করে নিয়োগপত্র তৈরি করেন। যাতে পিটিসি খুলনার স্মারক বসিয়ে তৎকালীন পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শুক্লা সাহার স্বাক্ষরিত একটি ভুয়া নিয়োগপত্র কামরুজ্জামানের ছেলে মেহেদী হাসানকে প্রদান করেন। পরে চাকরি না হওয়ায় কামরুজ্জামান বিষয়টি লিখিতভাবে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশকে অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) অনুসন্ধান করে অভিযোগের প্রমাণ পান। এরপর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স চলতি বছরের ৪ মার্চ তদন্তের মূল প্রতিবেদন মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পাঠায়।
এএসআই মিরান সাতক্ষীরার পর খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা, সদর থানা ও খালিশপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী থানায় ছিলেন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, এএসআই মিরান এখানে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে রয়েছেন। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া যুগান্তরকে জানান, পুলিশ সদস্য হয়ে চাকরি দেওয়ার নামে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থগ্রহণ এবং ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করার অভিযোগে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এএসআই মিরানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।