সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়ায় আমিরুল ইসলাম (৫২) নামে এক কৃষককে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা সহ ১২ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাতে নিহত কৃষকের ছেলে নাঈম প্রামানিক বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। নিহত আমিরুল ইসলাম উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের গোনাইগাঁতী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামীরা হলো, উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুল হাই, তার স্ত্রী রনজিতা খাতুন ও ছেলে রাকিবুল ইসলাম, টুটুল প্রামানিক, গোলাম কিবরিয়া, রেজাউল করিম, ডাবলু প্রামানিক, আব্দুস সালাম, হাফিজ উদ্দিন, ফাজিলা খাতুন, বাকি প্রামানিক, রাফসান প্রামানিক।
মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত আমিরুল ইসলামের সাথে আসামীদের পূর্বে থেকে বিরোধ ও শক্রুতা চলে আসছিলো। ১ নং আসামী আব্দুল হাই উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ৬ নং ওয়ার্ডের সভাপতি। সে বিভিন্ন বিচার শালিস করে গ্রামের অসহায় মানুষের নিকট থেকে টাকা গ্রহন করে। এসব কথা লোকজন বলতে গেলে তাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
সম্প্রতি ওই গ্রামে কিছু লোকজনের মধ্যে নলকুপের স্ক্রীম স্থাপন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এনিয়ে শালিসী বৈঠক হয়। বৈঠকে স্ক্রীম মালিকদের কিছু টাকা আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই এর কাছে জমা রাখা হয়। কিন্তু এ টাকা তিনি স্ক্রীম মালিকদের আর ফেরত দেননি। বিষয়টি নিয়ে কৃষক আমিরুল ইসলাম সহ এলাকার কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাই। তিনি আমিরুল ইসলামকে খুন করার পরিকল্পনা করে।
গত রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) রাতে কৃষক আমিরুল ইসলাম গ্রামের একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এসময় আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাইসহ আসামীরা তার উপর হামলা চালায়। এসময় তাকে লোহার রড ও হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) সকালে
সে মারা যায়।