সারা জীবন যে মানুষটার সঙ্গে কাটাতে হবে, সবার আগে তো তাকে জানা চাই। বিয়ের পর কয়েকটা দিন পরস্পরের সঙ্গে একান্তে কাটানোটা তাই খুব জরুরি। মধুচন্দ্রিমা সেই সুযোগই করে দেয়। এখানে একান্তে কাটানো সময় বাকি জীবন দুজনের পথ চলাটাকে করে সহজ।
তারিখ ঠিক হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। তবে শেষ এক মাসের ধকল যেন আর নেওয়া যায় না। অনেক দিন ভালোবেসে বিয়ে করছেন, এমন অনেক দম্পতিকেও দেখেছি, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার চাপে একসময় কাহিল হয়ে পড়েন। উপভোগ তো দূরের কথা, কোনোমতে বিয়েটা শেষ করতে পারলেই যেন বাঁচেন। আর যাঁদের ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ’, তাঁদের অবস্থাটা তাহলে বুঝুন।
সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, এ বছরই যাবেন। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনাও শুরু করেছেন। শুরু থেকেই এই মুমতাহিনা টয়া ও সৈয়দ শাওনর ভাবনায় ছিল মধুচন্দ্রিমায় দেশের বাইরে যাবেন। চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে এই দম্পতির সংক্ষিপ্ত তালিকায় এখন আছে থাইল্যান্ড, দুবাই অথবা তুরস্ক।
এমন অনেক দম্পতি, ২০১৯, ২০২০, ২০২১ বা ২০২২ সালে যাঁদের বিয়ে হয়েছে, কথা বলতে গিয়ে জানতে পারলাম, তাঁদের অনেকেই করোনার বাস্তবতায় এখনো মধুচন্দ্রিমায় যেতে পারেননি। অপেক্ষায় আছেন খুব শিগগির পাড়ি জমাবেন নিজেদের পছন্দের জায়গাটিতে।
মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনাটি গুছিয়ে করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে বিয়ের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিন। যদি দেশের বাইরে যেতে চান, আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে টিকিটের দামও কম পড়বে। থাকার জন্য ভালো জায়গা পাবেন। ভিসার জন্যও সময় পাবেন।
বিয়ের পরের এই ভ্রমণটাই হলো জীবনসঙ্গীকে চিনে নেওয়ার যথার্থ সময়। তাই প্রস্তুতিতে যদি তাড়াহুড়ো থাকে, তাহলে সেটার প্রভাব মধুচন্দ্রিমাতেও পড়বে। তবে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তেও মধুচন্দ্রিমায় বেরিয়ে পড়া যায়। সেটা অবশ্য কিছুটা ক্লান্তিকর হয়ে পড়তে পারে।
সাদিয়া আনজুম আর সায়জুস সালেহিন দম্পতির মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনাটি যেমন হঠাৎ সিদ্ধান্তে করা। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে, পরদিনই উপস্থিত সব বন্ধু ঘুরতে চলে যান আলিকদম। বিয়ের পরদিন সকালে তাঁরাও সিদ্ধান্ত নেন, বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেবেন। তবে এই ভ্রমণের জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলেন না সাদিয়া, ‘আমাদের কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ক্লান্ত ছিলাম অনেক। ঘুমহীন কাটাতে হয়েছে অনেক রাত। পরদিন সকালে আমার স্বামীর অনুরোধে আমিও রাজি হলাম। অভিজ্ঞতাটি শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর হলেও খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।’ দুই রাত, তিন দিন ছিলেন তাঁরা। বিয়ের পরদিনই পাহাড়ে পাহাড়ে হেঁটে বেড়িয়েছেন। উঠেছেন মারাংথন পাহাড়ের চূড়ায়। খাবার ছিল কাপ নুডলস, চানাচুর আর চিপস। সব মিলিয়ে বন্ধুদের নিয়ে ভিন্ন আমেজের এক মধুচন্দ্রিমা উপভোগ করেছেন এই দম্পতি।