1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
মাছ ‘তাজা’ দেখাতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রং, একজনকে জরিমানা - Pundro TV
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৪:১৯ অপরাহ্ন



মাছ ‘তাজা’ দেখাতে মেশানো হচ্ছে কাপড়ের রং, একজনকে জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কাপড়ে ব্যবহার্য রাসায়নিক রং মিশিয়ে সাদা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া মাছকে ‘তাজা’ দেখানোর অভিনব কায়দা তৈরি করেছেন বাগেরহাটের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। জেলা সদরের একমাত্র সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ এবং পাইকারি মৎস্য বিক্রয় কেন্দ্র কেবি মাছবাজারসহ বিভিন্ন বাজারে চলছে এমন কাণ্ড। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা।

সম্প্রতি সরেজমিনে শহরের কেবি, বাধাল, দেপাড়া ও ফতেপুর মাছবাজারে রঙে চুবিয়ে মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। বিক্রেতা ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যবসায়ী এ কাজ করে আসছেন। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে রং দেওয়া হয় বেশি। পাইকারি বাজার থেকে কেনার পর জাভা, ভোলা, তুলার ডাটি, রয়নাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রং মেশানো পানিতে ভিজিয়ে রাখেন তাঁরা। এরপর সেগুলো তুলে বিক্রির জন্য দোকানের ঝুড়িতে সাজানো হয়। এতে মাছে ফ্যাকাশে ভাব থাকে না, ‘তাজা’ মনে হয়। এ ছাড়া মাছের ফুলকাও দেখে বোঝা যায় না মাছ বাসি কি না।

বাগেরহাট শহর ও এর আশপাশ এলাকায় ভ্যানে ফেরি করে মাছ বিক্রি করেন দুজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা জানান, গত বৃহস্পতিবার ভোরে বাগেরহাটের কেবি বাজার থেকে মাছ কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রঙে চুবিয়ে তুলছিলেন তাঁরা। একজন বললেন, ‘ভাই, সবাই তাজা মাছ চায়। মাছে রং দিলে একটু ভালো ও তাজা দেখায়, তাই রং দিই। এতে ক্রেতা ভালো বুঝে বেশি মাছ কেনে।’
কচুয়া উপজেলার বাধাল মাছবাজারের কাছেই এক বিক্রেতাকে দেখা যায় একইভাবে রং মেশানো পানিতে ভিজিয়ে রেখে মাছ বিক্রির জন্য ঝাঁকায় রাখতে। রং মেশানো মাছে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিক্রেতা বলেন, ক্ষতি হয় কি না, তা জানি না। ক্ষতি হলে দোকানে এই রং বেচে কেন?

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, এগুলো সাধারণত রাসায়নিক। মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তা পাকস্থলী, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই মাছসহ যেকোনো ধরনের খাদ্যপণ্য কেনার বিষয়ে ভোক্তাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।

এমন অভিনব কায়দায় প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত কাপড়ের রং আর ফরমালিনের পানিতে মাছ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে তোলেন তাঁরা। বাজারের বিভিন্ন দোকানে টেক্সটাইলের রঙের ডিব্বা ও প্যাকেট পাওয়া যায়। গোপনে লাল ওই রং কিনে এনে বালতি ও ড্রামে করে পানিতে মিশিয়ে কিছুক্ষণ মাছ ভিজিয়ে রাখলে ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া মাছ ‘তাজা’ দেখা যায়। পরে মাছগুলো ঝাঁকায় সাজিয়ে বিক্রি করা হয়।

এদিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, রোববার ভোরে কেবি মৎস্য আড়তে অভিযান চালিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক রং মিশানোর সময় আকবর সরদার নামের এক মাছ ব্যবসায়ী হাতেনাতে ধরা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় তাঁর কাছে পাওয়া ক্ষতিকর রং মেশানো মাছ ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধ রুখতে আমরা নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি ভোক্তাদেরও সচেতন করছি। ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে।’

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST