করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গতকাল থেকে দেশে শুরু হয়েছে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়া দেশব্যাপী এ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
এবারের লকডাউনকে সফল করতে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক ফাঁকা দেখা গেছে।
ADVERTISEMENT
সরকার ঘোষিত লকডাউনের পাশাপাশি সাপ্তাহিক এই ছুটির দিনের ভোর থেকেই হচ্ছে বৃষ্টি। ফলে সড়কে মানুষের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ব্যক্তিগত যানবাহনও তেমন একটা দেখা যায়নি। বিভিন্ন সড়কে অল্প কিছু রিকশা, মাইক্রোবাস, ট্রাক,কার্ভাড ভ্যান, পিকআপ চলাচল করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকায় কথা হয় সাব্বির আহমেদ নামে একজন পথচারীর সঙ্গে। লকডাউন কেমন হচ্ছে তা বুঝতে আরও দুই একদিন সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি। সড়কে যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে যে রিকশাগুলো চলছে তারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মশিউর রহমান নামের আরেক পথচারী রিকশায় খিলগাঁও থেকে কুড়িল যাচ্ছিলেন। মাঝপথে কথা হয় মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ২০০ টাকা রিকশা ভাড়ায় কুড়িল যাচ্ছি, একদিকে লকডাউন অন্যদিকে ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তায় খুব একটা মানুষ দেখতে পাইনি। যেহেতু গণপরিবহন নেই, তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় যাচ্ছি। এ পর্যন্ত যতটুকু এসেছি সেসব সড়কে কোথাও মানুষের খুব বেশি উপস্থিতি নেই। গতকালের তুলনায় আজ যানবাহনও কম সড়কে।
অন্যদিকে নতুন বাজার এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে মাথায় পলিথিন লাগিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন নাসির উদ্দিন নামের একজন রিকশাচালক। তিনি বলেন, ভোর থেকে বৃষ্টি হওয়ায় সড়কে মানুষ নেই, তাই ভাড়াও পাচ্ছি না। সকাল থেকে মাত্র দুইটাভা ভাড়া পেয়েছি। গতকালের তুলনায় আজ সড়কে মানুষের সংখ্যা আরও কম। লকডাউন এবার ভালোই হচ্ছে মনে হয়, খুব কম সংখ্যক মানুষকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে।
প্রজ্ঞাপন অনুসারে, কঠোর লকডাউন চলাকালে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহনসহ সব ধরনের যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
গতকাল সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনেও রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। বিভিন্ন সড়কে তৎপর ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বিধিনিষেধ অমান্য করে ঘর থেকে বের হয়ে সড়কে ঘোরাঘুরি করার অপরাধে রাজধানীতে ৪৯৭ জনকে আটকও করা হয়। এর মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৫৮ জনকে আর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে আটজনকে। বাকিদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।