1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
রুখে দাড়ানোর এখনই সময় - Pundro TV
বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৩ অপরাহ্ন



রুখে দাড়ানোর এখনই সময়

মীর্জা সেলিম রেজা :
  • প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২

ইতোমধ্যে আমরা এক আজব দেশে প্রবেশ করেছি। আইন আছে সংবিধান বিদ্যমান। আইন ও সংবিধান সবার জন্য সমান তবে বর্তমান সময়ে হিসাবটা একটু আলাদা আইন ও সংবিধানের প্রয়োগ ভিন্ন ভিন্ন। ওয়ান ইলেভেনের সেনাসমর্থিত সরকার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী যথাক্রমে ৬ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে। তাদের ভাষায় এসব দুর্নীতির মামলা। নানা ঘটনাচক্রে ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা বিদায় হলেও পরিকল্পিতভাবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসীন হন।

যথারীতি শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা হলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো ক্ষমতাবলে প্রত্যাহার করে নিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো রয়ে গেল। এসব মামলা সবই প্রতিহিংসামূলক এবং মিথ্যা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব জানেন এবং বোঝেন কারণ তিনি বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ। শুরু হলো খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে হিংসাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির অভিনব পদক্ষেপ।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এর টাকা আত্মসাৎ করেছেন নাকি খালেদা জিয়া! অথচ দেখা গেল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের এবং তা বেড়ে ৬ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। তবুও মামলার সাজা হলো। শেখ হাসিনার মামলা মাপ খালেদার মামলা অব্যাহত। একই আইনের দুইরকম যাত্রা।

সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট হয়েছে। আইন মোতাবেক সকল মেহনতী সাংবাদিকের দাবিদার। কিন্তু শেখ হাসিনা আমল বলে কথা। যারা কেবলমাত্র সরকার সমর্থিত তাদের শুধু সেইসব কথিত সাংবাদিকরাই টাকা পেল আর কেউ নয়। অদ্ভুত আইন। কথায় বলে এক চোখে নুন অন্য চোখে গুড় বিক্রির মত।

দরবেশের গল্পের মত এক ব্যক্তির একটি মুরগি  ডিম (আন্ডায়) দুটি কুসুম হয়েছে। তিনি স্থানীয় এক পীর বাবা অর্থাৎ দরবেশের কাছে জানতে চাইলেন ” একটি আন্ডার দুটি কুসুম  কওতো দরবেশের মানে কি?.. দরবেশ মহা চিন্তায় পড়ে গেলেন! কিন্তু উত্তর তো দিতে হবে। দরবেশ বললেন এটা আল্লাহর কেরামতি। দেশের সাংবাদিকদের কোনো স্বাধীনতা নেই। বাকস্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে অনেক আগেই। বড় বড় পত্রিকার সম্পাদক মালিকরা এখন পুতুল! সত্য কথা লিখতে ভুলে গেছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। মধ্যরাতে ভোটচুরির মহড়ার পরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু বললেই গ্রেপ্তার সীমাহীন নির্যাতন রিমাণ্ড আরো অনেক কিছু।

গণতন্ত্রকে হাতের পুতুল বানানো হয়েছে। ভিন্নমত প্রকাশের সাংবাদিকদের রাখা যাবে না। সরকার যা বলবে তা মানতে হবে। বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডে হীরক রাজার দেশের সিনেমার কথা মনে করিয়ে দেয়। সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে ভজন ডজন মামলা। দীর্ঘ দিন কারাবাস করে তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। গ্রেফতার হন সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী । র্দীর্ঘ দিন কারা বাস করেন। পরে জামিনে মুক্তপান।

বিএফইউজের বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ সাহেব কে যেভাবে তার কর্মস্থল থেকে গুন্ডা নিয়ে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে মনে করিয়ে দেয়। অনেকদিন কারাবাসের পর এই বৃদ্ধ সাংবাদিক আবুল আসাদ এখন জামিনে রয়েছেন।

সত্যকথা যাতে লেখা না হয় তার জন্য ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে সাংবাদিকদের বোবা বানিয়ে রাখা হয়েছে। ভয় হোক কিংবা ইচ্ছে করে হোক আরেক শ্রেণী সাংবাদিক সরকারের তৈল ও মর্দনে ব্যস্ত। টকশোতে একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী সরকারের তাবেদারীতে মানুষ অতিষ্ঠ। দেশীয় টেলিভিশন এর উপর থেকে দর্শকদের আকর্ষণ কমেযাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের উন্নয়ন বিদ্যুৎ বিলের উন্নয়ন ভ্যাট উপরের উন্নয়নে জনগণ অতিষ্ঠ। মধ্যবিত্ত সমাজের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।

সরকারের উচ্চ মহল সম্ভবত বুঝতে পেরেছেন হাজারের নির্যাতন করলেও এদেশের আমজনতা তাদের ভোট দেবে না অতএব ভোটের নামে মধ্যরাতের নাটক চলছে চলবেই। অষ্টম আশ্চর্য এক প্রধান নির্বাচন কমিশনার সরকারের হুকুম পালনে  মশগুল। ৩ পার্সেন্ট ভোট কে ৭০ পার্সেন্ট বানানো সিইসির কাছে কিছুই নয়। সিইসি অনেক কেরামতি জানেন। মুজিবের বাকশাল মানুষ দেখেছে এইবার তার উত্তরসূরির মহা বাকশালী কায়দা দেখছে।

সরকারের হয় নিরপেক্ষ নির্বাচন হলেই ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসবে। আর এজন্যই সরকারের এত ক্ষোভ। চারিদিকে মিথ্যার ছড়াছড়ি কঠিন অবস্থার মধ্যে চলছে দেশ ও জাতি। এমনি অবস্থায় সংবিধিবদ্ধ এক কঠিন এর মুখোমুখি। বিশেষ করে দেশপ্রেমী সাংবাদিকদের জন্য আরো দুর্গম।

দেশের মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল মহামান্য আদালত কেও অজ্ঞাত আদর্শের উপর ভর করতে হয়। পর আর কিছুই নেই জীবন বাঁচা ফরজ। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা তার প্রমাণ দিয়ে গেছেন। কার এত বড় বুকের পাটা যে সাহস করে সত্য কথা বলে? বিরোধী রাজনৈতিক দলের উপর সীমাহীন নির্যাতন হামলা-মামলা হত্যা গুম রাজপথে পুলিশি হামলা মনে করিয়ে দেয় সরকার একদলীয় শাসনকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

হয়তো অতীতের সেই স্লোগান আবারো ফিরে আসতে পারে… এক নেতা এক দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ! অফিস আন্দোলন আন্দোলন এবং রাজপথ। এক্ষেত্রে মেহেনতি সাংবাদিকদের বসে থাকলে চলবে না। মনে রাখতে হবে রাত যত গভীর হয় সূর্য ততো অগ্রবর্তী হয়। একই আইন ও সংবিধানের ২ যাত্রা ২ ফল। এটা এক অশনী সংকেত। অতএব রুখে দাঁড়ানোর এটাই সময়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ



© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST