1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
প্রচণ্ড গরমে গর্ভকালীন জটিলতায় নারীরা - Pundro TV
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন



প্রচণ্ড গরমে গর্ভকালীন জটিলতায় নারীরা

পুন্ড্র.টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ১৫ জুন, ২০২২

ঘরের কাজ করে যাচ্ছিলেন রাজিয়া। মাস ছয়েক আগেই ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন তিনি। তবে তার বয়স খুব একটা না। অল্প বয়সেই মা হয়েছেন তিনি। কন্যার নাম তামান্না। কেঁদেই চলেছে পুঁচকেটা। ভর দুপুরে রোদের তাপ বাড়ায় গরমে যেন প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে শিশুটির। সব ছেড়ে ছুড়ে মেয়ের কাছে এলেন রাজিয়া। একটু পানি পান করিয়ে শুয়ে দিলেন ফ্যানের একেবারে কাছে। আহা, বাতাসে প্রাণ জুড়িয়ে কান্না থেমে গেলো শিশুটির। হাত-পা ছুঁড়ে মায়ের ওড়না দিয়ে খেলছে সে।

সন্তানসম্ভবা সোনারি, বয়স বিশের কোঠায়। কিছুদিন পরই হয়ত পৃথিবীর আলো দেখবে তার সন্তান। এই অবস্থায়ও কড়া রোদে ক্ষেতে কাজ করছেন তিনি। তুলে আনছেন হলুদ তরমুজ।

তার প্রতিবেশী ওয়াদেরির বয়স ১৭। কয়েক সপ্তাহ আগে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু বিশ্রাম না নিয়ে যোগ দিয়েছেন কাজে। সাথে নিয়ে এসেছেন নবজাতক ছেলে সন্তানকে। ক্ষেতের পাশেই তাকে চাদরে মুড়িয়ে রেখেছেন, যাতে ক্ষুধা লাগলে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন।

রাজিয়া, সোনারি, ওয়াদেরি – তিনজনের বাড়িই পাকিস্তানের জাকোবাবাদে। পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম শহর এটি। এখন তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি। তাদের মতো বিশ্বের অনেক দেশেই নারীরা গর্ভাবস্থায় তীব্র গরমে খুব যন্ত্রণার মধ্যে কাটান। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সঙ্কটের দ্বারপ্রান্তে নারীরা।

সোনারি বলেন, ‘যখন গরম শুরু হলো, আমরা গর্ভবতী ছিলাম। অনেক কষ্ট হতো। অস্থিরতায় দিন কাটতো।’

সেই ১৯৯০ দশক থেকে এখন পর্যন্ত ৭০টি গবেষণা চালানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় প্রচণ্ড তাপের মধ্যে থাকার কারণে গর্ভবতী নারীদের জটিলতার ঝুঁকি বেশি থাকে।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি এক ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য শিশু মৃত প্রসব এবং অকাল প্রসবের সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাংশ বাড়ে। বিশ্বব্যাপী বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দ্বারা সমীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রচণ্ড গরমে নারীরা গর্ভাবস্থায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘর এবং বাইরের কাজ করে থাকেন। দেখা যায়, কাজ করা অবস্থায় তাদের ব্যাথা উঠে যায় এবং সন্তানের জন্ম হয়। অথবা পা ব্যাথা করে, জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেন অনেক সময়। জাকোবাবাদের অনেক নারীই এমনটা জানিয়েছেন।

মানবাধিকার কর্মী লিজা খান বলেন, ‘মায়েদের এত কষ্ট কেউ দেখেও দেখে না। আসলে কেউ তাদের পরোয়াই করে না। তারা নীরবে সব সয়ে যায়।

সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে তাপমাত্রা অনেক বেশি। ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থা বেশি শোচনীয়। গত এপ্রিলে ৩০ বারেরও বেশি চরম তাপমাত্রা বয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের বিজ্ঞানীরা।

জাকোবাবাদে দুই লাখ মানুষের বসবাস। বেশি গরম পড়লে কী করেন তারা? জবাব, ‘যখন আর গরম সহ্য করতে পারি না, তখন কাথা মুড়ি দিয়ে থাকি।’ হাসতে হাসতে মজার ছলে বাসিন্দারা এমনটাই বলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ



© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST