1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষি আবহাওয়া প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে - Pundro TV
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন



উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষি আবহাওয়া প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে

পুন্ড্র.টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২

উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কৃষি আবহাওয়া প্রকল্প। এই প্রকল্পের সেবাসমূহ যথাযথভাবে বিস্তার ঘটাতে পারলে দেশের কৃষি ও কৃষকের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। বাস্তবায়ন হলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ফসল উৎপাদন প্রায় দিগুন এবং এসডিজি অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন “কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প” পরিচালক ড. মোঃ শাহ কামাল খান। কৃষির বগুড়া আঞ্চলিক অফিস কর্তৃক আয়োজিত দিনব্যাপি এক কর্মশালায় এমন তথ্যদেন তিনি।

ওই কর্মশালায় বগুড়া অঞ্চলের আওতাধীনে বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও পাবনার উপপরিচালক, জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, এটিআই, হর্টিকালচার সেন্টার, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির আঞ্চলিক ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এবং উপজেলা পর্যায়ের সকল উপজেলা কৃষি অফিসার উক্ত কর্মশালায় অংশগ্রহন করেন। সেই সাথে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিরা কর্মশালায় উপস্থিতিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বগুড়া আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শফিউজ্জামান।

এসময় কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে ড. মোঃ শাহ কামাল খান যথোপযোগী তথ্য-চিত্র-ভিডিও এর সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত একটি স্মার্ট পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশানের মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। “ঠান্ডা গরম বন্যা খরা কিংবা জলোচ্ছাস, বাঁচিয়ে দিবে ঠিক সময়ে একটু পূর্বাভাস” প্রকল্পের এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রকল্পের বিস্তারিত তুলেধরেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএই’র বগুড়া অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ ইউসুফ রানা মন্ডল। এসময় তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। কাজেই নির্ভরযোগ্য কৃষি আবহাওয়া বিষয়কতথ্য কৃষকদের মাঝে সময়মত পৌঁছে দেওয়া কৃষি প্রধান বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে প্রতিকূল আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যেমন ফসল রক্ষা করা যাবে তেমন অনুকূল আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন খরচ কমানোর পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যাবে।

বাংলাদেশের কৃষিতে আবহাওয়ার তথ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আবহাওয়ার তথ্যের অভাবে প্রতিবছর প্রকৃতিক তান্ডবে ক্ষতির শিকার হয় কৃষকরা। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নকৃত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক সারাদেশ ব্যাপি বাস্তবায়নাধীন কৃষি মন্ত্রণালয়ের এই “কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পটি’ দ্রুত সময়ের মধ্যেই কৃষকদের মধ্যে সাড়া ফেলবে বলে আশাবাদি সংশ্লিষ্টরা। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- কৃষি উৎপাদন টেকসই করার লক্ষ্যে কৃষকের কাছে কৃষি আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য দ্রুত পৌঁছে দেওয়া এবং আবহাওয়া ও জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবসমূহের সাথে কৃষকের খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

এছাড়াও এ প্রকল্পের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য কৃষি আবহাওয়া এবং জলবায়ু বিষয়ক ঝুঁকি সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত কৃষকের উপযোগী করে প্রস্তুত করে তা বিভিন্ন সম্প্রসারণ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ৪ হাজার ৫১ টি ইউনিয়ন পরিষদে অটোমেটিক রেইনগজ ও কৃষি আবহাওয়া ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ৪৮৭টি উপজেলায় কিওস্ক স্থাপন এবং এসএএওদের কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য প্রেরণের জন্য ইন্টারনেট কানেক্টিভিটিসহ ৬হাজার ৬৬৪টি ট্যাব সরবরাহ করা হয়েছে।  কিওস্ক ব্যবহার করে কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তি কৃষি আবহাওয়া তথ্য পোর্টাল (নধসরং.মড়া.নফ), কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ফধব.মড়া.নফ), বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (নসফ.মড়া.নফ), বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (ভভপি.মড়া.নফ) থেকে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ওয়েবসাইট পরিদর্শন ও প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ/প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। সর্বসাধারণের সহজে ব্যবহারের জন্য এ কিওস্কটি সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৫.০০ টা পর্যন্ত দেশের সকল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের উন্মুক্ত স্থানে রাখা থাকে।

প্রকল্পের আওতায় নিয়মিত সপ্তাহে দুইদিন ৬৪ জেলার জন্য এবং একদিন জাতীয় পর্যায়ের জন্য কৃষি আবহাওয়া বুলেটিন তৈরি, বামিস পোর্টালে আপলোড ও সম্প্রসারণ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ (ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও আকস্মিক বন্যা, শৈত্য প্রবাহ, আম্ফান প্রভৃতি) এর আগে ও পরে করণীয় সম্পর্কে সচেতন করে বিশেষ কৃষি আবহাওয়া বুলেটিন প্রদান করা হয়।

ইতোমধ্যেই সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষক গ্রুপ থেকে কৃষক প্রতিনিধির নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগ নম্বর সম্বলিত ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। এ ডাটাবেজে ১৫ হাজার সুনামধন্য ও প্রতিষ্ঠিত কৃষক গ্রুপ থেকে ৩০ হাজার প্রগতিশীল, কর্মঠ ও নেতৃত্বদানকারী কৃষক প্রতিনিধির তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসব কৃষকদেরকে এসএমএস ও আইভিআর (ভয়েস ম্যাসেজ)-এর মাধ্যমে জরুরি অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত অবহিত করা হয়ে থাকে। উল্লেখিত কৃষক প্রতিনিধিগণ প্রাপ্ত তথ্য তাদের গ্রুপের ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য কৃষকদের মাঝে বিস্তার করে থাকেন। কৃষক প্রতিনিধির পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দের কাছেও এসএমএস পৌঁছানো হয়। প্রাপ্ত তথ্য ও কৃষি আবহাওয়া পরামর্শ কাজে লাগিয়ে কৃষকগণ প্রতিকূল আবহাওয়া মোকাবিলার পাশাপাশি অনুকূল আবহাওয়ায় করণীয় বিষয়ক তথ্যসমূহ সদ্ব্যবহার করে মাঠের ফসল রক্ষা, সঠিকসময়ে ফসলের যথাযথ ব্যবস্থাপনা, অর্থের সাশ্রয় এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ



© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST