1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
রুশ হামলার ভয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ফিনল্যান্ডের মানুষ - Pundro TV
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৫ অপরাহ্ন



রুশ হামলার ভয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ফিনল্যান্ডের মানুষ

পুন্ড্র.টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ১৮ মে, ২০২২

ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে ইউরোপের মানুষ। বিশেষত রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ফিনল্যান্ড এই নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এমনকি দেশটির জনগণ রাশিয়ার হামলার ভয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।

রাশিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তবে সামরিক দিক থেকে ফিনল্যান্ড এত দিন নিরপেক্ষতার নীতি মেনে আসছিল। ৫৫ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে নিয়োগপ্রাপ্ত সেনার সংখ্যা ১৩ হাজার। যদিও ফিনল্যান্ডে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৯ লাখ মানুষ রয়েছেন। তাঁদের মধ্য থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে যুদ্ধের কাজে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে।

তবে এসব পরিসংখ্যান ফিনল্যান্ডবাসীর মন থেকে রুশভীতি দূর করতে পারছে না। তাই তাঁরা সপ্তাহান্তে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলোয় ভিড় করছেন। দেশটির সান্তাহামিনা দ্বীপের বাসিন্দা ভিলে মুক্কা। পেশায় প্রকৌশলী ৩০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ছুরি হামলা থেকে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এএফপিকে তিনি বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত ভয় বেড়েছে। সবাই নিজের জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। এ জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন অনেকেই।

স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এসব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। সামরিক ইউনিফর্ম ও হেলমেট পরে অংশগ্রহণকারীরা সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেওয়া, বিস্ফোরক শনাক্ত ও যুদ্ধের সময় জঙ্গলে চলাচলের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পরের সপ্তাহ থেকে এসব প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের হার ১০ গুণ বেড়ে গেছে বলে জানান ফিনল্যান্ডের ন্যাশনাল ডিফেন্স ট্রেনিং অ্যাসোসিয়েশনের (এমপিকে) সংগঠক ওসি হিয়েতালা। তিনি বলেন, অন্য সময়ে প্রতি সপ্তাহে ৬০০ মানুষ এসব প্রশিক্ষণে অংশ নিতেন। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে এ সংখ্যা ছয় হাজারে উন্নীত হয়েছে।

চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গত এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটিকে ফিনল্যান্ড সরকার প্রায় ৩০ লাখ ইউরোর অতিরিক্ত তহবিল জোগান দিয়েছে বলে জানিয়েছে এএফপি। এমপিকে প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে ৬ মাস থেকে ১ বছর মেয়াদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। তাঁদের মধ্যে অর্ধেকই বয়সে তরুণ।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে দুটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে ফিনল্যান্ডের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চলা এসব লড়াইয়ে শক্তিশালী প্রতিবেশী দেশটির কাছে ফিনল্যান্ড অনেক ভূমি হারিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা ভোলেনি দেশটির মানুষ। তাই সোভিয়েত উত্তরসূরি রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার ভয়ে ন্যাটোয় যোগ দেওয়া, জনগণের স্বেচ্ছায় সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়াসহ নানা কার্যক্রম শুরু হয়েছে ফিনল্যান্ডে।

সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী ৪৩ বছরের টুমাস ভ্যারে বলেন, ‘ভীতিকর অভিজ্ঞতা খুঁজতে খুব বেশি অতীতে যেতে হবে না। গত শতকের মাঝামাঝিতেই আমরা ভুগেছি। এ ভীতির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক প্রশিক্ষণে আমি আরও সক্রিয় হয়েছি।’
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর এখনো তিন মাস পেরোয়নি। এর আগেই গত রোববার ফিনল্যান্ড সরকার ন্যাটোতে যোগ দিতে আবেদন করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটি কয়েক দশকের পুরোনো নিরপেক্ষতার নীতি পরিত্যাগ করছে। ফিনল্যান্ডের পথ ধরে একই ঘোষণা দিয়েছে সুইডেন।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিনল্যান্ডের বেশির ভাগ জনগণ। এ বিষয়ে ভিলে মুক্কা বলেন, ‘আমি ন্যাটো জোটে যুক্ত হওয়ার পক্ষে। ফিনল্যান্ড একটি ছোট্ট দেশ। আমার মতে, নিজেদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এটা সবচেয়ে কার্যকর কৌশল।’

পুতিনের হুঁশিয়ারি

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যুক্ত হওয়া রাশিয়ার জন্য নিরাপত্তাজনিত হুমকি বয়ে আনবে না বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে বলেন, প্রতিবেশী দেশে অস্ত্র ও সেনা মোতায়েন করলে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর আগে তিনি ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন।

এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মঙ্গলবার বলেছেন, নিরপেক্ষতার নীতি মানলেও অনেক আগে থেকেই এসব দেশ (ফিনল্যান্ড–সুইডেন) ন্যাটোর কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এমনকি তাদের ভূমি ব্যবহার করে এই জোট পূর্বের দেশগুলোয় সামরিক কার্যক্রম চালিয়েছে। তাই নতুন করে ন্যাটোর সদস্য হওয়ায় বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ



© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST