শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার সুদর্শন সেনেভিরত্নে। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে নতুন বিকশিত এই বিশ্বে দুই দেশের সম্পর্কের মূল্যায়ন করা দরকার। এখন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা অংশীদারি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। কারণ আমাদের ঐক্য বঙ্গোপসাগরের চারপাশের অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখবে।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা বন্ধুত্বের ৫০ বছর উপলক্ষে শনিবার শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যমে হাইকমিশনারের সাম্প্রতিক একটি বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে হাইকমিশনার জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সার্ক, বিমসটেক এবং আইওআরএতে প্রতিনিধিত্ব করা বৃহত্তর পরিবারের অংশীজন। তিনি বলেন, ঢাকা এবং কলম্বোর একসঙ্গে সমৃদ্ধি প্রয়োজন। শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিনিয়োগের দিকে তাকিয়ে আছে।
হাইকমিশনার বলেন, ভারত মহাসাগর এখন বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার বলয়গুলোর আগ্রহের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে তাদের সম্পৃক্ততার আকাঙ্ক্ষাও বাড়ছে। শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার বলেন, ‘‘বর্তমানে আমরা তীব্র প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব প্রত্যক্ষ করছি। এর ওপর দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। কারণ বিশ্বব্যাপী ‘নিউ-লিবারেল’ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা এই অঞ্চলে আক্রমণাত্মক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ’’ তিনি বলেন, নিশ্চিতভাবে এটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য ও সৌহার্দ্যকে পরিবর্তন করতে পারে।
শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা বঙ্গোপসাগরের দুটি কৌশলগত প্রান্তে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বৃহত্তর বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রবেশদ্বার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। হাইকমিশনার বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর মূলত একটি মহাসাগরীয় মহাসড়ক। এই হিসেবে আমাদের দুই দেশের ভবিষ্যৎ এবং টিকে থাকার সক্ষমতার বিষয়টি ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসৈকতের সুরক্ষাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। ’
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর বিশ্বের অন্যতম সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকা—এটি এখন স্বীকৃত। তাই এর প্রাকৃতিক ও মানবসম্পদের বিষয়ে উচ্চ প্রতিযোগিতা রয়েছে।
সেনেভিরত্নে দুই দেশের জনগণ এবং বিশ্বের জন্য উপহার হিসেবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে আরো ৫০ বছরের বন্ধুত্ব ও সংহতির কামনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বেসরকারি খাতের শিপিং কম্পানিগুলো সম্প্রতি যৌথ উদ্যোগে কাজ শুরু করেছে এবং সরকারি মালিকানাধীন শিপিং করপোরেশনগুলো একসঙ্গে কাজ করছে।