শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকার কমলাপুর, বিমানবন্দর, তেজগাঁও ও ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এদিনে দেওয়া হচ্ছে ২৭ এপ্রিলের টিকেট।
সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় টিকেটের জন্য যাত্রীর উপচেপড়া ভিড়। স্টেশনের ২৩টি কাউন্টারের সামনেই দীর্ঘ লাইন।
টিকেট নিয়ে বেরিয়ে আসা সানজিদা আখতার নামে এক নারী গণমাধ্যমে বলেন, “ভাইয়া এসেছি গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়, এখন (৮টা ১৫ মিনিটে) পেলাম কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের টিকেট। হিসাব করে দেখেন, কত ঘণ্টায় টিকেট পেলাম। তারপরও পেয়েছি।”
রেল স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান, তারা প্রতিদিন প্রায় ২৭ হাজার টিকেট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। এই টিকেটের অর্ধেক স্টেশনের কাউন্টারে এবং বাকি অর্ধেক অনলাইনে বিক্রি হওয়ার কথা।
তিনি বলেন, “আজকে থেকে অগ্রিম টিকেট কাটা শুরু হল একযোগে অনলাইন ও কাউন্টারে। পাঁচটি স্টেশনে এই অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে। “যতক্ষণ টিকেট থাকবে, ততক্ষণ যাত্রীরা টিকেট পাবেন। কাউন্টারের পাশাপাশি অনলাইনেও টিকেট দেওয়া হচ্ছে।”
সায়েরা নামে আরেক নারী জানান, তিনি রাত থেকে অপেক্ষা করে টিকেট পেয়েছেন রংপুরের। পরিবারের চারজনের টিকেট নিয়েছেন তিনি।
অগ্রিম টিকেট কাটার সময়ে যাত্রীদের এনআইডি বা জন্মসনদের ফটোকপি দেখাতে হচ্ছে। একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারজনের টিকেট কিনতে পারছেন। সেক্ষেত্রে তাকে অন্য তিনজনেরও এনআইডি বা জন্মসনদ দেখাতে হচ্ছে।
শনিবার ২৭ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি হচ্ছে। রোববার বিক্রি হবে ২৮ এপ্রিলের টিকেট, সোমবার ২৯ এপ্রিলের টিকেট, মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিলের টিকেট এবং বুধবার ১ মের টিকেট বিক্রি হবে।
ঈদের পর ফিরতি যাত্রা শুরু হবে ৫ মে থেকে। সেই টিকেট বিক্রি হবে ১ মে। এরপর যথাক্রমে ৬ মের জন্য ২ মে, ৭ মের জন্য ৩ মে এবং ৮ মের জন্য ৪ মে টিকেট কেনা যাবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ মে ঈদুল ফিতর হবে। সে অনুযায়ী ঈদের ৯ দিন আগে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করল বাংলাদেশে রেলওয়ে। তবে ঈদ যদি ৪ মে হয়, তবে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মের ট্রেনের টিকেট।
কোন স্টেশনে কোন অঞ্চলের টিকেট
# কমলাপুর রেল স্টেশন: সমগ্র পশ্চিমাঞ্চল ও খুলনাগামী স্পেশাল ট্রেন
# ঢাকা বিমানবন্দর রেল স্টেশন: চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন
# তেজগাঁও রেল স্টেশন: ময়মনসিংহ, জামালপুর ও দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল ট্রেনসহ সব আন্তঃনগর ট্রেন
# ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশন: মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেন।
গত দুই বছর করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ঈদে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। দুই বছর পর ঈদযাত্রায় ফিরেছে ট্রেন।
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য নিয়মিত ১০২টি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে ৬ জোড়া বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে চাঁদপুর স্পেশাল-১ ও চাঁদপুর স্পেশাল-২ ট্রেন চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে এবং ঈদের পর ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত চলাচল করবে।
এছাড়া ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রুটে দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল একই সময়ে চলাচল করবে।
ঢাকা-খুলনা রুটে খুলনা স্পেশাল ট্রেন বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেসের অতিরিক্ত রেক দিয়ে চলাচল করবে আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত।
এছাড়া ঈদের দিন ভৈরব বাজার ও কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়ায় স্পেশাল-১ এবং ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া স্পেশাল-২ চলাচল করবে।