ইমরান খানের সদ্য সাবেক সরকারের মানবাধিকারমন্ত্রী শিরিন মাজারি টুইটে বলেছেন, বানি গালায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর। তাঁরা ইসলাম-ভীতি ও সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈশ্বিক পর্যায়ে ইসলাম-ভীতির বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখায় ও অবস্থান নেওয়ায় ইমরান খানের প্রশংসা করেছেন ইলহান। বিভিন্ন ইস্যুতে সাহসী ও নৈতিক অবস্থান নেওয়ায় ইলহানেরও প্রশংসা করেছেন ইমরান খান।
যুক্তরাষ্ট্রের এই আইনপ্রণেতার সঙ্গে বৈঠকের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নের মুখে পড়েন ইমরান খান। বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তারা বৈঠক করায় তাঁর সমালোচনার বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন তাঁরা।
শুধু সাংবাদিকই নন, টুইটার ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরাও এই সাক্ষাতের ন্যায্যতা জানতে চান। সরকারি কর্মকর্তারাও এই বিতর্কে সরব হন। এই সাক্ষাতের ঘটনায় ইমরান খানের সমালোচনা থেকে নিজেদের নিবৃত্ত রাখতে পারেননি তাঁরা। সামনে থেকে এই সমালোচনার নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। তিনি ইমরান খানের কাছে জানতে চান, ইলহান ওমরের সঙ্গে বৈঠক ‘ষড়যন্ত্র কিংবা (পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে) হস্তক্ষেপ ছিল কি না’। তিনি বলেন, কোন ষড়যন্ত্রের জাল বোনা হচ্ছে?
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধী দলের বৈঠককে ষড়যন্ত্রমূলক বলে সমালোচনা করা ইমরান খানের বক্তব্যও স্মরণ করিয়ে দেন নতুন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকের বিষয়টি তদন্ত করা হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
সানাউল্লাহ বলেন, ইমরান খান যদি নিজে থেকে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ না করেন, মন্ত্রী হিসেবে তিনি সেটা তদন্ত করবেন। কারণ, জনগণের সত্যটা জানা উচিত। অন্যথায় ইমরান খান নিয়াজি তাঁর স্বভাব অনুযায়ী কয়েক দিন পর আরেকটি চিঠি জনসমক্ষে আনবেন।
জানা গেছে, প্রশাসনিকভাবে নয়, ব্যক্তিগত সফরেই পাকিস্তানে এসেছেন এই মার্কিন আইনপ্রণেতা। একজন নারী মার্কিন কংগ্রেস সদস্য হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই সফরের আয়োজন করেছেন বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা একজন পাকিস্তানি ব্যবসায়ীর মাধ্যমে তাঁর দপ্তর সরাসরি ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি ঠিক করেছে বলে এক পিটিআই নেতা জানান।
জাতীয় পরিষদে বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে ৯ এপ্রিল ক্ষমতা ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। এই অনাস্থা প্রস্তাবের নেপথ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন তিনি। প্রমাণ হিসেবে এক কূটনীতিক তারাবার্তাকে ‘হুমকির চিঠি’ দাবি করে দলীয় সমাবেশে প্রদর্শন করেন পিটিআই চেয়ারম্যান। এ ছাড়া মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিরোধীদের বৈঠকেরও সমালোচনা করতেন তিনি।