মুজিবনগর দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) আয়োজিত আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আওয়ামীপন্থী নীল দলের নেতা অধ্যাপক এম রহমত উল্লাহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
রবিবার বিকেলে এ আলোচনা সভায় খুনী খন্দকার মোশতাকের প্রতি শিক্ষক সমিতির সভাপতির এই বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
আলোচনা সভায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। সমিতির সভাপতির বক্তব্যকে ধৃষ্টতাপূর্ণ উল্লেখ করে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।
মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। আরও উপস্থিত ছিলেন উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, ট্রেজারার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এম রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীসহ আরো অনেকেই।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দিতে এসে এম রহমত উল্লাহ তার লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের জাতীয় চার নেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাকের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’
তার এ বক্তব্যের পরপরই তীব্র প্রতিবাদ জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। তিনি বলেন, ‘খন্দকার মোশতাকের মত ব্যক্তির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে না। খন্দকার মোশতাককে নিয়ে দেয়া এই বক্তব্য অবিলম্বে এক্সপাঞ্জ করার আবেদন জানাচ্ছি।’
প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে গণমাধ্যমকে বলেন,’শিক্ষক সমিতির সভাপতির বক্তব্যের পরেই উপ-উপাচার্য মহোদয় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান। এবং আমি মনে করি মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর খুনীর প্রতি এভাবে বক্তব্য দেয়া ধৃষ্টতাপূর্ণ অপরাধ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের বক্তব্য গ্রহণ করতে পারে না। সমিতির সভাপতির লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। অবিলম্বে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ বলেন, যারা এ অভিযোগ করতেছে তারা কিন্তু ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে এসব করতেছে। আমি কিন্তু আলোচনায় এমন কিছু বলিনি। শুধু মুজিবনগর সরকারে থাকা সবার নাম বলেছি মাত্র।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের সঙ্গে তো আমার কোন আত্মীয়তা নাই। তাহলে আমি কেন তাকে শ্রদ্ধা জানাতে যাব? মোশতাক ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। কাজেই তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি কেন ইতিহাসের উপর দুঃসাহসিকতা দেখাবো?