1. shahajahanbabu@gmail.com : admin :
বটমূল-মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রাণ ফিরছে বৈশাখে - Pundro TV
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৩ অপরাহ্ন



বটমূল-মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রাণ ফিরছে বৈশাখে

পুন্ড্র.টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২২

বৈশাখের ভোরে ঢাকার রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন যেমন থাকবে, চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রাও হবে; দেশজুড়েও বসবে বৈশাখী মেলা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার বর্ণিল আয়োজনে রাজধানীসহ পুরো দেশে বাঙালির সার্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ-১৪২৯ উদযাপন করা হবে পহেলা বৈশাখে।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত দুই বছর ঘরবন্দি অবস্থায় বৈশাখ এসেছিল বাঙালির জীবনে; সুনসান ছিল রমনার বটমূল। এক বছর বাদে গতবার মঙ্গল শোভাযাত্রা হলেও তা ছিল প্রতীকী আয়োজনে।

নিষ্প্রাণ দুই বৈশাখ পেরিয়ে এবার প্রাণ ফিরছে রমনা ও শাহবাগে; ইউনেস্কো ঘোষিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার উপর গুরুত্বারোপ করে ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বর্ণিল শোভাযাত্রা করা হবে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে দেশজুড়ে কুইজ প্রতিযোগিতা (নববর্ষ ও বঙ্গবন্ধু), সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকজ মেলার আয়োজন করা হবে; সুসজ্জিত করা হবে নববর্ষের ব্যানার, ফেস্টুনে।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (অনুষ্ঠান) এ জে এম আব্দুল্যাহেল বাকী গণমাধ্যমকে জানান, এবার সব ধরনের আয়োজন থাকছে; তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

গত বছর রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করেছিল সরকার; এবারও সেই আয়োজনটি রমনার বটমূলে করা হবে কি না- তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

বুধবার ছায়ানটকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রমনার বটমূলেই এবারের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান আব্দুল্যাহেল বাকী।

ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা গণমাধ্যমকে বলেন, অনুমতি পাওয়ার পর আর কোনো বাধা থাকল না; তারা ইতোমধ্যে মহড়া শুরু করে দিয়েছেন।

‘নব আনন্দে জাগো’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পহেলা বৈশাখের দিন সকাল ৬টায় রমনার বটমূলে রাগালাপ ও সংগীতে শুরু হবে ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন।

সংগীতশিল্পী লাইসা আহমেদ জানান, প্রতিবারের আয়োজনে ১২৫ জনের মতো শিল্পী এ আয়োজনে অংশ নেন; এবার স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি বিবেচনা করে শিল্পীর সংখ্যা অল্প কয়েকজন কমিয়ে আনা হবে।

“দুই বছর পর আমরা এটি করতে পারছি বলে খুবই আনন্দিত। অনুষ্ঠানের সময়টাও সামান্য একটু কমে আসবে। তাছাড়া সকলেরই প্রবল উৎসাহ আছে। অনেকদিন পর এমন আনন্দ-আয়োজনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি।”

শেষ সময়ে অনুমতি পাওয়ায় প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি দেখছেন কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে লিসা বলছিলেন, “গত বছরের যে মহড়া করেছিলাম সেটার কিছু সঞ্চয় ছিল আমাদের। তাছাড়া আমাদের শিল্পীরা সারা বছরই মহড়ায় অংশ নেন। ফলে এটাকে খুব ঘাটতি বলছি না আমরা।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরণের মূল আয়োজন মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনের জন্য সপ্তাহখানেক ধরেই চারুকলা বিভাগে শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বুধবার চারুকলা বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ঘিরে সপ্তাহখানেক ধরেই সেখানে চলছে নানা কর্মযজ্ঞ। জয়নুল গ্যালারির সামনে একদল শিক্ষার্থী সরাচিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন মাছ, ফুলসহ নানা মোটিফ।

বাঘ, সিংহসহ নানা রকমের মুখোশে রঙ-তুলির আঁচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন আরেকদল শিক্ষার্থী; হাতপাখা ও চরকি তৈরি করছেন কেউ কেউ। জয়নুল গ্যালারির সামনে শিল্পকর্মগুলো বিক্রির জন্য প্রদর্শন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিফ থাকবে; ভেতরে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনায় কয়েকজন শ্রমিক মোটিফগুলোর কাঠামো তৈরি করছেন।

রজনীকান্ত সেনের গান থেকে ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ এবারে চারুকলার বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাভাবিক আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা ফিরলেও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি তারা বিবেচনায় রাখছেন। এবারের শোভাযাত্রায় মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব মানার তাগিদ থাকবে।

তবে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা তারা নির্ধারণ করে দিতে চান না; আগ্রহী যে কেউ এতে অংশ নিতে পারেন।

মেট্রোরেলে নির্মাণকাজের জন্য শোভাযাত্রার গতিপথে খানিকটা পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান নিসার হোসেন; সময় সকাল ৯টাই থাকছে।

“চারুকলার সামনের রাস্তা সরু হয়ে আসায় টিএসসির মোড় থেকে রাজু ভাস্কর্যকে পেছনে রেখে শোভাযাত্রা শুরু করব। সেটা ভিসির বাড়ির সামনে গিয়ে আবার টিএসসিতে এসে শেষ হবে।”

রমনা বটমূলে, মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি জনসাধারণ যেন সহজে অনুষ্ঠানে আসতে পারেন, সেই বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

নববর্ষ উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলা একাডেমি, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন, নজরুল একাডেমী, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান এবারের নববর্ষের আয়োজন থাকবে।

পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসেও নববর্ষের আয়োজন থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২
Developed By ATOZ IT HOST