মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংস দমন-পীড়নের অভিযোগে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আগে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ফর টেররিজম অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, বর্বরতা ও নিপীড়ন মিয়ানমারের সামরিক শাসনের ট্রেডমার্ক হয়ে উঠেছে। মার্কিন রাজস্ব বিভাগ চলমান সহিংসতা ও দমন-পীড়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ওয়াশিংটন দুজন সামরিক কমান্ডার, একটি পদাতিক ডিভিশনের পাশাপাশি তিনজন ব্যবসায়ী এবং চারটি সংস্থাকে লক্ষ্য করে নতুন এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন ব্রিগেডিয়ার-জেনারেল কো কো ও, মেজর জেনারেল জাই হেইন ও তাঁর ৬৬ পদাতিক বাহিনী। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ বলছে, ওই পদাতিক বাহিনী ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাধারণ নাগরিকদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায়। এ বাহিনীর বিরুদ্ধে আটক, অত্যাচার, হত্যা ছাড়াও পুড়িয়ে মারার অভিযোগ রয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করে এমন তিন ব্যক্তি ও সংস্থাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। এর আগে এ ধরনের অভিযোগ দুটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের বিমানবাহিনীর কমান্ডার ইন-চিফ হতুন অং এবং বিমানবাহিনীকে সহায়তাকারী একটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বেলারুশের অনারারি কনসাল অং মোয়ে মিন্ট ও তাঁর সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোও যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
এর আগে গত রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনকে গণহত্যা স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেন ওয়াশিংটনের হলোকস্ট জাদুঘরে এ ঘোষণা দেন।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃশংস দমন-পীড়নের মুখে লাখো রোহিঙ্গা মুসলিম সে দেশ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।
জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ ২০১৮ সালে এই উপসংহারে পৌঁছায় যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন এই নৃশংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এই শব্দবন্ধের কোনো আইনগত সংজ্ঞা নেই।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/696041238106090