জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থেমে নেই র্যাগ। হলে, ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়। এ বছরের ৩ জানুয়ারি আক্তারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি ও হাবিবুর রহমান লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। তবে এর আগের ব্যাচের অর্থাৎ ৪৮ আবর্তনের থেকে আগের শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বেশি। ৫০তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা এখনও ক্যাম্পাসে আসেননি।
শিক্ষার্থীদের প্রথমে রাখা হয় গণরুমে। মীর মশাররফ হোসেন হলের গণরুমে গিয়ে দেখা যায় তোষকের সারি। মাথার উপরে অপ্রতুল ফ্যান। শক্তিহীন এসব ফ্যান যেন ঘুরতে নারাজ। বড় একটি রুমে থাকেন প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী। নেই হাঁটার জায়গাও। গরমের সঙ্গে তারা ছারপোকার কামড়ে অস্থির। গণরুমে থাকা এসব শিক্ষার্থী সকলেই বলেন, তাদের প্রধান সমস্যাটাই হচ্ছে ভীতি। সবসময় একটা মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে চলতে হয়। থাকতে হয় ভয়ে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, আমাদের সঙ্গে যারা নবীন শিক্ষার্থী যোগ দেন তাদের রীতিমতো ভয়ভীতির পাশাপাশি এক ঘরে করে রাখা হয়। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর কিংবা অনুশাসনের বিপক্ষে আমরা বরাবরই সোচ্চার। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের দাপুটে আমরা কোণঠাসা। আর আমরা সংখ্যায় কম হওয়াতে চাইলেও সর্বোচ্চটা দিয়েও অনেক সময় অন্যায় রুখতে পারি না। তবে আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজের চোখে একটা তথ্য যায় যে, দুর্নীতি হচ্ছে।
হলের র্যাগিং বন্ধে পাপেট শো করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটার। এর একজন সদস্য আসাদুজ্জামান আশিক বলেন, ১৫ই মার্চ এই শোতে র্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা তুলে ধরা হয় পাখিদের মাধ্যমে। এর একটাই উদ্দেশ্য আমরা চাই র্যাগিং মুক্ত সুষ্ঠু ক্যাম্পাস।
সম্প্রতি র্যাগ ডে’তে ভাইরাল হওয়া দু’টি নৃত্য নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়। এই অনুষ্ঠানে মঞ্চে ছিল উদ্দাম নৃত্য। আর দর্শক সারিতে ছিল মাদকের আসর। ১০ থেকে ১২ই মার্চ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া অনেকেই গাঁজার ধোঁয়ায় থাকতে পারেননি। এমনি প্রকাশ্যে চলেছে মদ্য পান। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া একাধিক অনূজ শিক্ষার্থী বলেন, সেখানে বড় ভাইয়েরা শুধু মাদক সেবন না বিনামূল্যে বিতরণও করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতি ৪২ ব্যাচের অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন মাদকের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, আমরা মাদকের কোনো ব্যবস্থা করিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরসহকারী অধ্যাপক আ.স.ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, এছাড়াও র্যাগিং মুক্ত রাখতে আমরা তৎপর রয়েছি। আমি বলবো না র্যাগিং মুক্ত হয়েছে। তবে আগের থেকে অনেক কম। তিনি আরও বলেন, র্যাগিংয়ের পাশাপাশি মাদক নির্মূলেও আমরা সোচ্চার।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/544731707070920