রাশিয়ার তেল, গ্যাসের ব্যাপারে যুক্তরাজ্যও ঘোষণা দিয়েছে, ২০২২ সালের মধ্যে তারা পর্যায়ক্রমে আমদানি কমিয়ে এনে একেবারে বন্ধ করে দেবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা শেল জানিয়ে দিয়েছে, তারা আর রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের প্রভাব রাশিয়ার ওপর ভয়ংকর ভাবে পড়বে এবং অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হবে।
যুক্তরাষ্ট্র বিদেশ থেকে যে অপরিশোধিত তেল ও পরিশোধিত পণ্য আমদানি করে, তার আট শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে আর যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে পরিমাণটা হলো ছয় শতাংশ। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি এখনো। জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা ২০৩০ সালের আগেই শেষ করে দেবে।
রাশিয়া আগেই হুমকি দিয়েছে, তাদের ওপর তেল ও গ্যাস নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি তিনশ ডলার হবে। তার ধাক্কা বিশ্বের প্রতিটি দেশের ওপর এসে পড়বে। তাছাড়া তারা জার্মানিকেও গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এটা একটা খুবই শক্তিশালী বার্তা। এখন যা পরিস্থিতি হলো, তাতে রাশিয়াকে হয় আন্তর্জাতিক আইন মানতে হবে, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, নাহলে তাদের হাতে কোনো অর্থ থাকবে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, আলোচনার মধ্যে দিয়ে লড়াই বন্ধ করতে হবে। এদিকে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে শুধু যে মস্কো চাপে পড়েছে তা নয়, সব জায়গায় জ্বালানি থেকে শুরু করে সবধরনের পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভেনেজুয়েলান অয়েল চেম্বারের প্রধান রেইনালদো কুইন্তেরো বলেছে উত্তর আমেরিকার বাজারে তেলের সংকট মেটাতে প্রতিদিন চার লাখ ব্যারেল অতিরিক্ত তেল উত্তোলনের সক্ষমতা রয়েছে ভেনেজুয়েলার ।
গত শনিবার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা। পরে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন হামলার ঘটনায় রাশিয়াকে একঘরে করতে ভেনেজুয়েলাকে পাশে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় জ্বালানির বিকল্প উৎসের খোঁজে ভেনেজুয়েলা সফরে গেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
এর মধ্যেই বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রেইনালদো কুইন্তেরো বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন আট লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করে ভেনেজুয়েলা। তবে এর পরিমাণ বাড়িয়ে প্রতিদিন ১২ লাখ ব্যারেল উত্তোলন করার মতো অবকাঠামো তাঁর দেশের রয়েছে। কুইন্তেরো আরও বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে উত্তর আমেরিকার বাজারের খানিকটা চাহিদা পূরণ করতে পারব আমরা।’
মার্কিন কর্মকর্তারা রাশিয়ার জ্বালানির বিকল্প উৎস খুঁজতে ভেনেজুয়েলায় যাওয়ায় কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রাশিয়ার মিত্রদেশ ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন তাঁরা।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/346153244095926