বগুড়ার শেরপুরে শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর বসতবাড়ি ও নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এসময় ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীকে প্রায় তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার (০২ নভেম্বর) সকাল সাতটা থেকে বেলা দশটা পর্যন্ত উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শেরুয়া বটতলা বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপে আগামি ১১নভেম্বর এই উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু তালেব আকন্দ (প্রতীক নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আবুল কালাম আজাদ (প্রতীক আনারস) মার্কার পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র সোমবার (০১ নভেম্বর) দিনগত রাত থেকেই এই দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরই জেরধরে শেরুয়া বটতলা বাজারস্থ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর আনারস মার্কার নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় আ.লীগ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। পরবর্তীতে ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীর বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রেখে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, তাঁর প্রতিদ¦ন্দ্বি আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আবু তালেব আকন্দের ছেলের নেতৃত্বে তাদের কর্মী-সমর্থকরা আমার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বাধার সৃষ্টি করছে। সেইসঙ্গে আমার কর্মী-সমর্থকদের নানামুখি ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। নির্বাচনের পোস্টার-প্যানা লাগাতে দিচ্ছে না। এমনকি লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাকিতায় মঙ্গলবার সকালেও শেরুয়া বটতলা বাজারস্থ তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকা প্রার্থীর লোকজন অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। সেইসঙ্গে কার্যালয়ে থাকা চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয় এবং পোস্টার-প্যানা ছিঁড়ে ফেলা হয়। পরবর্তীতে তাদের শতাধিক কর্মী-সমর্থক দেশীয় অস্ত্র লাঠি-সোঠা ও লোহার রড নিয়ে আমার বসতবাড়িতেও হামলা চালায়। প্রধান ফটকের সামনে থাকা দুইটি মোটরসাইকেল এবং বাসার দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। এতে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। সেইসঙ্গে বাসার একটি কক্ষে আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এসময় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আমার স্ত্রী, ছোট ছেলে-মেয়েরা চিৎকার ও কান্না করতে থাকে। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আবু তালেব আকন্দ বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে তার কোনো লোকজন জড়িত নেই। এটি তাদের সাজানো নাটক। বরং তারাই আমার ছেলে ও তার সঙ্গে থাকা দুইজনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। খবর পেয়ে আমার লোকজন তাদের উদ্ধার করেছে। অথচ উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া ওই স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে ও বসতবাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি করেন এই আ.লীগ প্রার্থী।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেইসঙ্গে আমি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শ করি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
https://www.facebook.com/pundrotvbd/videos/186041433699585